অবাক হচ্ছেন? কিন্তু সত্যিই ঝাড়গ্রামের বনপুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোজ ক্লাস করছে ইনসুলিন, সর্পগন্ধা, রক্তচিতারা! ব্যাপারটা খোলসা করে বলা যাক। ২০১৫ সালে স্কুলের পাঠ্যক্রমে ভেষজ গাছ চাষ ও তার গুণাবলী অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই বিষয়টাই চোখ খুলে দেয় এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার সেনের। তিনি ঠিক করেন শুধু বই পড়ানো নয়, আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী এবং বর্তমানে বিলুপ্ত হতে বসা বিভিন্ন ভেষজ গাছ স্কুল প্রাঙ্গনেই চাষ করবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। এরপর স্কুলের সহশিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতায় স্কুল প্রাঙ্গনে সর্পগন্ধা, ইনসুলিন, রক্তচিতা, পিপুল, তুলসির মত নানান ভেষজ গাছ লাগান। প্রায় ১৫০ টি এমনই প্রয়োজনীয় কিন্তু বিলুপ্তির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ভেষজ গাছ এই মুহূর্তে ওই স্কুলে আছে।
advertisement
আরও পড়ুন: '৫ মিনিট সময় দিন, কিছু বলতে চাই!' কোর্টে হাতজোড় পার্থর, কী বলবেন? তুঙ্গে জল্পনা
প্রতিদিন স্কুলে এসে স্যারদের সঙ্গে হাত লাগিয়ে ছাত্রছাত্রীরা ভেষজ গাছগুলির পরিচর্যা করে। অভিভাবকরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিষয়টিতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আরও আগ্রহ বাড়াতে বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদের নামে তাদের নামকরণ করা হয়েছে। তাই বর্তমানে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট ভেষজ গাছের নামেই ডেকে থাকেন শিক্ষকরা। এতে ছাত্রছাত্রীরা যেমন খুশি তেমনই অলক্ষ্যেই ভেষজ গাছের নাম নিয়ে তাদের চর্চা তৈরি হয়ে যাচ্ছে।
এই ভেষজ গাছগুলি থেকে মূলত আমাদের নানান অসুখের চিকিৎসার ওষুধ তৈরি হয়। প্রাচীন কাল থেকেই এগুলো শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু আমাদেরই অবিবেচক কাজকর্মের ফলে ক্রমশই অবলুপ্ত হয়ে যেতে বসেছে ইনসুলিন, সর্পগন্ধা, রক্তচিতারা। তাদের বাঁচিয়ে রাখতেই ঝাড়গ্রামের এই প্রত্যন্ত এলাকার প্রাথমিক স্কুলটি এক অসম লড়াই শুরু করেছে। যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে যথেষ্ট ভালো ফল মিলছে।
রঞ্জন চন্দ