অনেক ক্ষেতেই গাছ উপড়ে পড়েছে গোড়াসুদ্ধ, ফলে সবজির সঙ্গে সঙ্গে চাষের পরিকাঠামোও ধ্বংস হয়েছে। বিশ্বরম্ভা গ্রামের চাষি রণ দাস বলেন, “ঝড়ের দাপটে আমার পটলের সব মাচা ভেঙে গেছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পেঁপে গাছও উপড়ে পড়েছে। ফলত বড় ক্ষতির মুখে পড়েছি। সরকার যদি দ্রুত সাহায্য না করে, তাহলে সবজি চাষে ঘুরে দাঁড়ান অসম্ভব হয়ে পড়বে।” তবে এই পরিস্থিতি শুধু রণবাবুর একার নয়, বিশ্বরম্ভা থেকে শুরু করে গোটা পূর্বস্থলী জুড়েই চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। ঝড়ের ফলে অনেক ক্ষেতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে সবজি, যার ফলে তা আর বাজারে তোলার উপযোগী নেই। অনেক চাষিই জানান, তাঁরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন, এখন ফলন না পেলে ঋণ শোধ করাও অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। চাষিদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া কোনও ভাবেই ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা দ্রুত ক্ষতিপূরণ এবং সার্বিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন : একটানা বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন সবজির জমি, চিন্তায় পূর্ব বর্ধমানের চাষিরা
স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নজরে রাখা হয়েছে বলে খবর। পেঁপে চাষি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, বাজারে দাম ভাল আছে , কিন্তু আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। গাছও মনে অনেকগুলোই মরে যাবে। কোনও রকমে যাতে বাঁচান যায় সেই ব্যবস্থায় করছি। উল্লেখ্য, পূর্বস্থলী বরাবরই রাজ্যের অন্যতম সবজি উৎপাদনকারী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এখানকার পটল, পেঁপে, টমেটো, ঝিঙে, কুমড়ো সহ নানা ধরনের সবজির উপর নির্ভর করে হাজার হাজার কৃষক পরিবার। তবে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা পর পর ঘটতে থাকলে পূর্বস্থলীর কৃষি অর্থনীতিই বড় ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। পাশাপাশি এর প্রভাব পড়তে পারে রাজ্যের বাজারেও।
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন“
উৎপাদন কমে গেলে সরবরাহ কমবে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে দামেও। এই মুহূর্তে চাষিদের একটাই আর্জি, প্রশাসন যেন পাশে দাঁড়ায়, সাহায্যের হাত বাড়ায়, যাতে আগামী দিনের চাষে তাঁরা আবার সাহস সঞ্চয় করতে পারেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা হর্টিকালচার সূত্রে জানা গিয়েছে, সবজি চাষে ক্ষতির জন্য কোনও প্রকল্প নেই। তবে হাইব্রিড সবজির বীজ আসবে এবং তা জেলার প্রত্যেকটা ব্লকে পৌঁছে যাবে। যে সকল চাষির বেশি ক্ষতি হয়েছে তাঁদের দেওয়া হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা নতুন করে আবেদন জানালে তাঁদের নিয়ে ভাবা হবে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী