যদিও সেই সময় রাজ্য রাজি হয়নি। এবারের নতুন করে ফের তৎপরতা শুরু হয়েছে হিন্দুস্তান কেবলস-এর সেই জমি নিয়ে। জল্পনা শুরু হয়েছে হিন্দুস্তান কেবলস-এর জমিতে রাজ্য কি নতুন করে কোনও শিল্প তৈরি করতে চলেছে?
আরও পড়ুন- নর্দমার জল ঢুকে পড়ে ঘরে! বহু বছর ধরে চলা সমস্যা থেকে মুক্তি চায় 'মন্দিরের শহর'
advertisement
সূত্রের খবর, নবান্নের নির্দেশে রাজ্য ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর এবং জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে হিন্দুস্তান কেবলস-এর জমির পরিমাণ কতটা আছে তা নিয়ে সার্ভে করার কথা বলা হয়। ইতিমধ্যেই যৌথ উদ্যোগে সেই সার্ভে প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, সার্ভে প্রক্রিয়া শেষ করে নবান্নতে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৯৪৭ একর জমি রয়েছে আসানসোলের রুপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেবলস-এর অধীনে। এবার সেই জমি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাজ্য।
কর্মচারীদের বেতন, গ্র্যাচুয়িটি বাবদ এই সংস্থার এখনও বকেয়া রয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা জমির কত দাম হতে পারে, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন বলে সূত্রের খবর।
সেক্ষেত্রে এই ৯৪৭ একর জমির ওপর নতুন করে কোনও শিল্প করা যায় নাকি সেই নিয়ে নবান্নের শীর্ষপর্যায়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, আগামী এপ্রিল মাসের ২০ ও ২১ তারিখে বিশ্ব বাণিজ্য শিল্প সম্মেলন রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
আরও পড়ুন- উন্নয়ন থেকে বহুদূরে মেদিনীপুরের এই অংশে বাসিন্দাদের ভরসা ভিক্ষাবৃত্তি
সেদিকে তাকিয়ে রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনাকে আরও ব্যাপকভাবে প্রসারিত করতে চাইছে রাজ্য। শুধু তাই নয়, বারবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের শিল্পে বিনিয়োগের পক্ষে সওয়াল করছেন। একাধিক অনুষ্ঠান থেকে বারবারই তিনি জানিয়েছেন, শিল্প তাঁর এখন অন্যতম টার্গেট
ইতিমধ্যেই তাজপুর সমুদ্র বন্দর নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আদানি গোষ্ঠী। শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গে শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব উত্তরবঙ্গের শিল্প সামিট করেছে। সেখান থেকেও কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে উত্তরবঙ্গ থেকে রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনা উজ্জ্বল করার জন্য।
এবার আসানসোলের রূপনারায়ণপুরে হিন্দুস্তান কেবলস-এর এই জমিতে নতুন করে কোনও শিল্প বা শিল্পপার্ক তৈরি করা যায় নাকি তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে রাজ্য। এমনটাই নবান্ন সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই এই জমির দাম কত হতে পারে তা নিয়ে পর্যালোচনাও শুরু করেছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, ফোনের জন্য "জেলি ফিল্ড কেবল" তৈরি করতে ১৯৫২ সালে আসানসোলের রুপনারায়নপুরে গড়া হয় হিন্দুস্তান কেবলস। কিন্তু বাজারে "অপটিক্যাল ফাইবার কেবল" চলে আসার পর থেকে কারখানাটি ধুঁকতে শুরু করে। ২০০১ সালে উৎপাদন একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়।
দু বছর বাদে কারখানার ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব যায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পুনরুজ্জীবন বোর্ডের হাতে। যদিও এর মাঝে আশার আলো দেখেছিল কারখানাটি। ২০১৩ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড এই কারখানা অধিগ্রহণে আগ্রহ দেখিয়েছিল।
সূত্র মারফত জানা যায়, এই সংস্থার প্রায় কয়েকশো কোটি টাকা দেনা থাকায় সেই সেটা কে মেটাবে তা নিয়েই মূলত জটিলতা দেখা দিয়েছিল।তার জেরেই বিষয়টি তারপরে আর এগোয়নি। শেষমেষ ২০১৬ সালে কারখানাটি পুরোপুরিভাবেই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবার হিন্দুস্তান কেবলস এর ৯৪৭ একর জমি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে রাজ্য। সম্প্রতি রাজ্য জমির সমীক্ষা করার পরপরই জল্পনা শুরু হয়েছে তাহলে কি রাজ্য এবার এই জমিই কেন্দ্রের থেকে নিয়ে নতুন করে শিল্প করবে?