হাইকোর্টের রায়ে ইতিমধ্যেই ২০১৬ সালে নিয়োগ নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্যানেল অবৈধ বলে বাতিল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবে এই খবর শোনার পর থেকেই অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মতো জীবন যেন উল্টো পথে চলতে শুরু করেছে ২০১৬ সালে পাওয়া অশোকনগরের দুই শিক্ষিকা স্বর্ণালি চক্রবর্তী ও শাওনি ভট্টাচার্যের।
advertisement
চাকরির পরীক্ষা দেওয়া সেই ওএমআর শিট হাতে ধরে স্বর্ণালি চক্রবর্তী জানান, এই রায়ে যোগ্য শিক্ষকদের সামাজিক অসম্মান করা হয়েছে। আগামী দিনে কী ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে দাঁড়াবেন তাঁরা, জানা নেই। এর থেকে বিচার ব্যবস্থা যদি ফাঁসির রায় দিত তবে ভাল হত, অন্তত এমন অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হত না শিক্ষক শিক্ষিকাদের।
আরও পড়ুন: ভোটের দিন, দার্জিলিং; আর কী চাই! পাহাড়ের রানিকে দেখে কী করলেন জওয়ানেরা?
এদিন, অশোকনগর কল্যাণগড় পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডের শ্বশুর বাড়িতে দাঁড়িয়ে গৃহবধূর গলায় এমনই আক্ষেপের সুর শোনা গেল। শিক্ষিকার চাকরি পাওয়ার পরই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেই বাড়ি তৈরি থেকে শুরু করে পরিবার পরিকল্পনার চিন্তাভাবনা গ্রহণ করেছিলেন অশোকনগরের আরেক প্রাক্তন শিক্ষিকা শাওনি ভট্টাচার্য।
কিন্তু এই রায়ের পর চাকরি চলে যাওয়ায় এখন ইএমআই থেকে শুরু করে নানা ধরনের লোন ও সংসার কীভাবে চালাবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। পাড়া-প্রতিবেশীরাও নানা সময়ে কটূক্তি ছুড়ে দিচ্ছেন। বাড়ির বাইরে বেরনোর ক্ষেত্রেও এখন আত্মসম্মানে লাগছে এই শিক্ষিকাদের।
দীর্ঘদিন ধরে দিনরাত এক করে পড়াশোনার পর পরীক্ষায় বসে মিলেছিল সাফল্য, পেয়েছিলেন শিক্ষিকার চাকরি। আর এক রায়ে আজ তাঁরা চাকরিহারা। কিছু মানুষের জন্য কেন সবার চাকরি যাবে! এ কেমন বিচার ব্যবস্থা! মানুষ তাহলে কোথায় যাবে বিচার পেতে! চোখের কোণে জল যেন থামতেই চাইছে না এই পরিস্থিতিতে। কিছু মানুষের দুর্নীতির বলি কেন সকলকে হতে হবে!
এখন তারই উত্তর খোঁজার চেষ্টায় বাতিল চাকরিপ্রার্থীরা। একজন দেগঙ্গার স্কুলে ও অপরজন মেদিনীপুরের একটি স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। চাকরি হারিয়ে মানসিক ভাবে খুবই ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। স্বামী সন্তান পরিবার নিয়ে সুন্দর গোছানো জীবন যেন অগোছালো হয়ে গিয়েছে এক নিমেষে।
Rudra Narayan Roy