মহালয়ার সকালে ভক্তি আর সংস্কৃতির মিশ্রণে রীতিমতো উৎসবে মাতল উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছি এলাকা। ভোররাতে যখন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠে বিভোর গোটা গ্রাম, তখনই একদল নারী-পুরুষ হাতে কাস্তে, হাঁসুয়া, দা, বটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন এই অনন্য আচার পালনে। এদিন পালিত হল ঐতিহ্যবাহী ‘নষ্ট চন্দন’ উৎসব।
advertisement
পরিবারের মঙ্গল ও সমাজকল্যাণের উদ্দেশ্যে ভক্তরা নির্বিচারে গ্রামের কলা গাছ, কচু, পেঁপে, লাউ ও কুমড়ো গাছ-সহ অন্যান্য আগাছে কেটে দেন। তবে এই উৎসবের বিশেষ দিক হল – কাটা ফল, সবজি বা গাছের কোন কিছুই তাঁরা বাড়ি নিয়ে যান না। সবই পড়ে থাকে মাঠে বা বাগানে।
কদম্বগাছিতে মহালয়ার দিন পালিত হল নষ্ট চন্দন উৎসব
স্থানীয়দের মতে, মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা এই ধর্মীয় প্রথার উদ্দেশ, মৃত পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি প্রার্থনা। পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনাতেই এই আচার পালিত হয়। অনেক ভক্তের বিশ্বাস, এদিন দেবী দুর্গা চামুণ্ডারূপে অসুর নিধন করেছিলেন। প্রতীকীভাবে গাছকে অসুর রূপে ধ্বংস করার মাধ্যমে সংসার ও সমাজে শান্তি ফিরে আসে। সকাল বেলায় তাই কদম্বগাছি গ্রামজুড়ে চলে গাছ কাটার ধুম, মন্ত্রোচ্চারণ। মহালয়ার আবহে যেন অন্য চেহারা নেয় গোটা এলাকা। যদিও বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের ধারণা এটি আগাছা দমনের একটা আচার। কারণ বর্ষার সময় প্রচুর আগাছা জন্মায় সেই আগাছা টাকে কেটে ফেলাই হচ্ছে রীতি। গ্রামবাসীদের কথায়, তাই বিশেষ মঙ্গল কামনাতেই করা হয় এই কাজ।