সমুদ্র যখন নিস্তব্ধ থাকে তখন তার বুকে নেমে পড়েন তিনি, কুড়িয়ে আনেন নুড়ি পাথর, খোঁজ রাখেন ম্যানগ্রোভ গাছ কোথায় প্রাকৃতিকভাবে মারা যাচ্ছে। এরপর সেখান থেকে ম্যানগ্রোভ গাছের শিকড়, মূল সংগ্রহ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজো, কালীপুজো অতীত! এবার শ্রাবণেও কার্নিভাল, শেষ সোমবারের ভিডিও দেখলে আপনিও চমকে যাবেন
advertisement
বছরের পর বছর ধরে মানুষ বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন কেউ কৃষিকাজ, কেউ দোকান চালান, কেউ আবার পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার তপন মঙ্গলের পেশা যেন একেবারেই ভিন্ন সুরে বাঁধা। তিনি সাগরের ধারে মৃত ম্যানগ্রোভ গাছের শিকড় সংগ্রহ করেন। তা দিয়ে তৈরি করেন নান্দনিক শৌখিন সামগ্রী। এছাড়াও তিনি ম্যানগ্রোভ গাছ বসানোর কাজ করেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এই কাজ তিনি করছেন টানা ২৫ বছর ধরে। কোনও প্রচার নেই, আড়ম্বর নেই নিজের কাজটাই করে যান তিনি। সমুদ্র যখন ঢেউয়ে ঢেউয়ে ডাকে, তিনি তখন খুঁজে বেড়ান ভেসে আসা মৃত শিকড়ের সৌন্দর্য। কোনও শিকড় তার গড়নে যেন এক প্রকৃতির ভাস্কর্য, কোনওটা আবার যেন গল্প বলা মুখ। এইসব শিকড় পরিষ্কার করে তিনি বিক্রি করেন নিজের ছোট্ট এক দোকানে।
দোকানটি একেবারে সমুদ্রতটের কাছে। বকখালিতে আসা পর্যটকরা কৌতূহলী চোখে তাকিয়ে থাকেন সেই সব শিকড়ের দিকে। কেউ কেউ কিনেও নেন। তপন মঙ্গলের বিশ্বাস, প্রকৃতি নিজেই শিল্পী। এ নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, “ম্যানগ্রোভের মৃত শিকড়, মূল দেখতে খুবই সুন্দর। এগুলি অনেকে আ্যকোরিয়ামে রাখেন। অনেকে আবার ঘর সাজানোর জন্য নিয়ে যান। ৫০-৬০ টাকা পিস ধরে বিক্রি করেন তিনি সেগুলি।”
এই কাজের মধ্যে যেমন রয়েছে সৌন্দর্যচর্চা, তেমনি রয়েছে পরিবেশের প্রতি অগাধ ভালবাসা। বর্তমানে যখন ম্যানগ্রোভ কাটার মত খবর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসে প্রায়শই। তখন তপন মঙ্গলের মত কেউ কেউ প্রকৃতির পরিত্যক্ত অংশকেই জীবন ও শিল্পের উপকরণ করে তুলে সেগুলিকে জীবন্ত করে তুলছেন। যা অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে অনেকের কাছে।