এককালে ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট চওড়া ছিল তার বুক, যেখানে শান্ত অথচ প্রাণবন্ত স্রোতে বয়ে যেত জলরাশি। আজ তা ইতিহাসের পাতায়। কালের নিয়মে সেই সোনাই আজ শুধুই স্মৃতি। কোথাও তা ৭০-৮০ ফুটে সংকুচিত, কোথাও ১০-১৫ ফুটে এসে নিভু নিভু প্রদীপ শিখার নিঃশ্বাস ফেলছে। এমনকি বহু অংশে স্রোত একেবারেই স্থগিত।
আরও পড়ুন: পর্দার আড়ালে বিপদ…! কাঞ্চননগরে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে যা করল, জানলে আপনিও অবাক হবেন
advertisement
সোনাই নদীর অংশ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার মোহনপুরের কালীপদ দাস ছিলেন প্রথম যে ব্যক্তি যিনি সোনাই নদী ঘিরেই বসতি গড়েন। এখন তার আশপাশে বহু ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে, যার অনেকটাই সোনাই নদীর খাতে। নদীর চেহারা বদলে গিয়ে এখন তা যেন শীর্ণকায় নর্দমার রূপ নিয়েছে। ১৯৭৬ সালে সিএমডিএ-র মানচিত্রে এই সোনাই নদীকে ঘিরে প্রায় ৫৬ টি জলাশয়ের উল্লেখ থাকলেও ১৯৯১ সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৪৫ এ। এমনকি এও শোনা যায়, ১৯৯৭ সালের সোনাইয়ের নদী ও জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে একটি পরিবেশ মামলা ও দায়ের হয়। কিন্তু সব করেও শেষ রক্ষা হল কী? সেই সোনাই আজ শুধুই কানে শোনা। সাধারণ মানুষের জীবনের যা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল, তা আজ চিরঘুমে! তবে পানিহাটির বুক চিরে একসময় বয়ে যাওয়া এই নদী এখন উন্নয়ন ও অবহেলার চাপে হারিয়েছে প্রাণ।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কৃষি, নৌপরিবহন এবং জনজীবনের সঙ্গে যুক্ত এই নদী আজ এক নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাস হয়ে রয়েছে। অতীতের স্মৃতিতে ভেসে থাকা সেই সোনাই যেন সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করছে— ফিরে পেতে চায় তার হারানো সত্তা। তবে আদৌ কি সম্ভব? প্রশ্ন শুধু সোনাই ঘিরে! সোনাই সংলগ্ন এলাকার প্রবীণ নাগরিকরা আজও এক টুকরো নদীর আশায় বুক বাঁধেন। এক সময় এই সোনাইকে ঘিরেই কত মৎস্যজীবীদের জীবন নির্বাহ হতো, আর আজ তারা পেশা বদলাতেও বাধ্য হয়েছেন। তাই এমন ঐতিহাসিক নদী সংরক্ষণের আবেদন তাদের। ফিরে পেতে চান জলের ঠিকানা। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করুক, এমন ঐতিহাসিক নদীর ইতিহাস। সাধারণ জনজীবনসহ প্রবীণ নাগরিকদের দাবি, এক টুকরো সোনাই এর আশায়।
শুভজিৎ সরকার