প্রায় দু’বছর ধরে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালের ৫২৭ নম্বর শয্যা ছিল তাঁর ঠিকানা। বৃদ্ধা করুণা দাস ছেলের পথ চেয়ে বসে থাকতেন। কিন্তু ছেলে আর নিতে আসত না। বয়সের কারণে স্মৃতিভ্রংশ হয়েছিল তাঁর।
ঠিকানা ও ছেলের ফোন নম্বর মনে করতে পারতেন না। অন্যদিকে তাঁর ছেলের এই কথা জানত। মায়ের কোমর ভেঙে যাওয়ার পর ছেলে গোপাল দাস নিজের পরিচয় গোপন রেখে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে অন্য নামে মাকে ভর্তি করে কার্যত পালিয়ে যান।
advertisement
ফলে হাসপাতালও ছেলের খোঁজ পায়নি। এতদিন বাদে হ্যাম রেডিওর সহযোগিতায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খুঁজে পেয়েছে গুণধরকে। ছেলেকে নিয়ে আসা হয়েছিল হাসপাতালে।
তারপর বৃদ্ধা মাকে বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। জানা গিয়েছে ওই বৃদ্ধার বাড়ি সুভাষগ্রামে। হ্যাম রেডিওর কর্তা অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস এই ব্যাপারে জানিয়েছেন, মাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর আর দেখতেও যায়নি ছেলে। মায়ের খরচ নাকি বইতে পারবেন না। তাই আনতেও যাননি।
অন্যদিকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করুণাদেবীকে বাড়ি পাঠানোর জন্য উদ্যোগ নেয়। তাঁকে ভর্তি করার সময় যে ফর্ম পূরণ করা হয়েছিল তাতে একটি নাম ও ফোন নম্বর ছিল। সেটিতে যোগাযোগ করে কোনও লাভ হয়নি। কারণ ফর্মে থাকা তথ্যে করুণাদেবীর ছেলের ঠিকানা, ফোন ছিল না।
আরও পড়ুন- পুকুরের মধ্যে ডুবে রয়েছে মন্দির, পূরণ হয় মনস্কামনা, বীরভূমে আসেন লক্ষ-লক্ষ মানুষ
এরপর পুলিশের কাছে যায় হাসপাতাল। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বৃদ্ধার সঙ্গে তাঁর ছেলের ছবি বের করে খোঁজা শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। অবশেষে হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে নিজেদের নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে সুভাষগ্রামে গোপালের বাড়ির সন্ধান পায় তারা।
এরপর তাঁকে একপ্রকার ধমক দিয়ে মাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ছেলে বাধ্য হয়েই আসেন হাসপাতালে। এই ঘটনায় হতবাক সকলেই।






