তাঁদের কথায়, এই ছত্রাক থেকেই তৈরি হচ্ছে ভেষজ রঙ, যা বর্তমানে বিভিন্ন হস্তশিল্প ও পরিবেশবান্ধব পণ্যে ব্যবহার হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে আসা এই গাছুরেদের দল তথা মুজাফর ও তাঁর সঙ্গীরা তাই এখন হাবরার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এই বিশেষ ছত্রাক সংগ্রহ করছেন।
advertisement
তিনি জানান, শিশু গাছ বা শিরিশ গাছে জন্মানো ছত্রাক সংগ্রহ করে প্রথমে ভালভাবে শুকিয়ে নিতে হয়। এরপর বিশেষ প্রক্রিয়ায় তা থেকে ভেষজ রঙ তৈরি হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রঙ তৈরির কারণেই এই ছত্রাক কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সেই ছত্রাক প্রক্রিয়াকরণ করা হয়, পরে রঙ তৈরির জন্য পুরুলিয়ায় পাঠানো হয়। এই পুরো প্রক্রিয়া থেকে তৈরি হয় পরিবেশবান্ধব ভেষজ রঙ, যা এখন বাজারে যথেষ্ট চাহিদাসম্পন্ন। তবে হঠাৎ এমন দৃশ্য দেখে কিছুটা অবাক হাবরার বাসিন্দারা। কেউ কেউ বলছেন, প্রথমে ভেবেছিলাম গাছ কেটে নিচ্ছে! পরে শুনলাম রঙ তৈরির ছত্রাক সংগ্রহ করছে। খুবই আশ্চর্যের বিষয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহার পরিবেশের জন্য যেমন নিরাপদ, তেমনই ক্ষতিকর রাসায়নিক রঙের বিকল্প হিসেবেও তা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, শিশু বা শিরিশ গাছের বাকলে বর্ষার পর এক ধরনের ছত্রাক জন্মায়। সেই ছত্রাক সাধারণত সাদা, ধূসর বা হালকা বাদামি রঙের হয়। সকালে গাছের গায়ে ভেজা অবস্থাতেই তা ছুরি বা বাঁশের টুকরো দিয়ে সাবধানে তুলে নেওয়া হয়, যাতে গাছের ক্ষতি না হয়। সংগ্রহ করা ছত্রাক প্রথমে ছায়াযুক্ত জায়গায় ৩-৪ দিন ধরে শুকানো হয়। এতে ছত্রাকের ভেতরের আর্দ্রতা চলে যায় এবং তা সংরক্ষণযোগ্য হয়ে ওঠে। রোদে শুকানো এড়ানো হয়, কারণ তাতে রঙের গুণমান নষ্ট হতে পারে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে ছত্রাক হাতে বা কাঠের খোলে পেষণ যন্ত্রে গুঁড়ো করা হয়। এই গুঁড়োই পরবর্তীতে রঙের মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেখান থেকে লালচে, বাদামি, হলুদ বা ধূসর রঙ হয়ে থাকে। এই ধরনের রঙ ব্যবহার করে কাপড়ে রঙ করা, হস্তশিল্প, প্রাকৃতিক প্রসাধনী, এমনকি ভেষজ চিকিৎসাতেও ব্যবহার হয় বলে জানা গিয়েছে।





