সকালে একটু শীত শীত ভাব। মাঠ জুড়ে এখন সোনা রঙের ধান। এই আবহাওয়ায় ধান কাটা একটু কম পরিশ্রমের। কিন্তু ধান কাটতে গিয়ে মহা সমস্যায় পড়ছেন রাজ্যের শস্য ভাণ্ডার পূর্ব বর্ধমান জেলার কৃষকরা। কারণ শিয়ালের উপদ্রব। বর্ধমানের সোনাপলাশি, কুড়মুন, মালম্বা থেকে শুরু করে রায়না, খন্ডঘোষ – সব জায়গাতেই এখন শিয়ালের আতঙ্ক। জমি যদি নদী বা ক্যানেলের ধারে হয় তবে তো কথাই নেই। আতঙ্ক সেখানে আরও বেশি। সোনাপলাশী গ্রামে ধান কাটতে গিয়ে এক ব্যক্তি তো বড়সড় শিয়ালের হামলার শিকার হয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: ‘মা-কে খুন করে দিত, ভারত না থাকলে…,’ মোদির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ শেখ হাসিনার ছেলের
রায়নার কৃষক প্রদীপ পান বলেন, ‘ভোরের দিকে একা জমির ধার দিয়ে যাওয়া খুবই ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলবদ্ধভাবে আক্রমণ করছে শিয়ালরা। ক্যানেলের ধারে গর্তে থাকছে তারা। কেউ কেউ ধান জমিতেও গা ঢাকা দিয়ে থাকছে। কাছে গেলেই হিংস্র রূপ ধারণ করে তেড়ে আসছে। শিয়ালের আঁচরে কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই একা একা মাঠে যেতে চাইছেন না অনেকেই। দলবদ্ধভাবে যেতে হচ্ছে। বিকেল থাকতে থাকতেই মাঠ থেকে ফিরতেও হচ্ছে শিয়ালের হামলার ভয়ে।’ বর্ধমানের কুড়মুনের বাসিন্দা অরিন্দম হাজরা বলেন, ‘এক একটা শিয়াল তো ছোট বাছুরের সাইজের। মানুষ দেখে ভয় পেয়েই ওরা হয়তো কামড়াতে আসছে। গত দু-তিন বছর ধরেই জমিতে শিয়ালের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। সকাল সন্ধ্যে একা মাঠে যাওয়া সত্যিই চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। জমির আলে এতোদিন ছিল সাপের উপদ্রব। শীত পড়ার পর তাদের দেখা কম মিলছে। কিন্তু শিয়ালের উপদ্রব বেড়েছে অনেকটাই।’
পরিবেশবিদরা বলছেন, এই সব এলাকায় মাঝখানে বেশ কয়েক বছর শিয়ালের দেখা মিলতো না বললেই চলে। এখন তাদের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। আসলে শিয়াল গর্তের পাশাপাশি ধান জমিতেও আশ্রয় নিচ্ছিল। ধান কাটা শুরু হওয়ায় তারা আশ্রয় হারা হচ্ছে। সে কারণেই তাদের বেশি সংখ্যায় দেখা যাচ্ছে।
