পৌষমেলার দৌলতে লাভের মুখ দেখেছেন সোনাঝুরি হাটের হস্তশিল্পের ব্যবসায়ীরা। আর এর ফলেই স্বাভাবিকভাবেই খুশি হস্তশিল্পী ও হাটে বসা ব্যবসায়ীরা। তবে জানা গিয়েছে যে সোনাঝুরির হাটের জন্য খাতায়-কলমে ১৮০০ জন ব্যবসায়ীর নাম নথিভুক্ত থাকলেও, বর্তমানে এর উল্টো চিত্র দেখা যায় সোনাঝুরি হাট জুড়ে। সোনাঝুরি হাটে বুধবার বাদে সপ্তাহে প্রতিদিনই প্রায় চার হাজারের বেশি ব্যবসায়ী হাটে নিজের পশরা সাজিয়ে বসেন বলেই দাবি স্থানীয়দের। ব্যবসায়ীদের কথায়, “প্রতিদিন একজন ব্যবসায়ীর গড় বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। সেই হিসেব করলে এক একজন ব্যবসায়ীর পৌষ মেলার ছয় দিনে বিক্রির অঙ্ক দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত।”
advertisement
বোলপুর শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার পাশাপাশি সোনাঝুরি হাটেও বিক্রি ছিল চোখে পড়ার মতো। এর ফলে হাটে বসা হস্তশিল্পীরা ব্যবসায়ীরাও লাভের মুখ দেখেছেন। তবে বিক্রি বাড়লেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি সোনাঝুরি হাটের। সম্প্রতি, বন দফতরের জমিতে কীভাবে ব্যবসায়ীদের হাট সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলে মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। আর সেই বিষয়ে পরিবেশ আদালতে মামলার ২০ জানুয়ারি চূড়ান্ত শুনানি রয়েছে। রসিদ-ব্যবসায়িক কর ছাড়াই কেনাবেচা কীভাবে সম্ভব, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে স্থানীয় কয়েকজন আদিবাসী শিল্পীদের নিয়ে শান্তিনিকেতনের আশ্রমকন্যা শ্যামলী খাস্তগীরের উদ্যোগে শনিবারে সপ্তাহে একদিন করে এই হাটের সূচনা হয়। সেই সময় নিছক কয়েকজন হস্তশিল্পী ব্যবসায়ীরা তাঁদের পশরা সাজিয়ে বসতেন। তবে সময়ের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে সেই ছোট পরিসরের হাট আজ বিশাল আকার নিয়েছে। বোলপুর শান্তিনিকেতনে আগত পর্যটকদের কাছে এই হাট এখন অন্যতম জনপ্রিয় এক মিলনক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি কলকাতা, বর্ধমান, বাঁকুড়া ও মুর্শিদাবাদ থেকেও বহু ব্যবসায়ী বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসেন। তবে এই হাট ঘিরে বিতর্কও কম নয়। অভিযোগ উঠেছে, বন দফতরের জায়গায় বেআইনিভাবে হস্তশিল্পীদের হাট কীভাবে সম্ভব। আর এই অভিযোগ তুলে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত পরিবেশ আদালতে মামলা রুজু করেছেন। তাঁর অভিযোগে জঞ্জাল ও প্লাস্টিকের অবাধ ব্যবহার, অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ফেলা, এর পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গাছ কেটে ফেলার মতো একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
