চিন্তা বাড়তে থাকে রাজা রানী সহ সকলের। একদিন দেখা দিল আশার আলো। রানীমাকে রাজকন্যা একদিন বললেন, কৃষ্ণনগরে রসে ডোবানো এক ধরনের ভাজা কালো রংয়ের মিষ্টি খেয়েছিল সে। সেই মিষ্টি মিললে মুখের অরুচি কাটতে পারে।
আরও পড়ুন- চলতে-চলতেই হঠাৎ বিয়েবাড়ির বাসে দাউদাউ আগুন, চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল কাঁথিজুড়ে
কী সেই মিষ্টি! কে তার কারিগর! কিছুই জানে না সে। তবে যে ময়রার কাছে সে ওই মিষ্টি খেয়েছিল, সেই ময়রার একটি পা খোঁড়া, তাই সে একটু খুঁড়িয়ে হাঁটে।
advertisement
রাজকন্যার মুখে এই কথা শোনামাত্র রাজা তখনই কৃষ্ণনগরের লোক পাঠালেন। খোঁজ মিলল সেই ময়রার। খুঁড়িয়ে বা লেংচে হাঁটার জন্য তাকে সবাই ডাকতো ল্যাংচা ময়রা বলে।
রাজার আদেশে সেই ময়রা তখন রাজকন্যাকে ঘিয়ে ভাজা রসে ডোবানো কালো রংয়ের একটু লম্বাটে অপূর্ব স্বাদের সেই মিষ্টি খাওয়াল। সেই মিষ্টি খেয়ে রাজকন্যার এতদিনের অরুচি দূর হলো।
রাজবাড়ির সবার মুখে হাসি ফুটল। ল্যাংচা ময়রার নামেই সেই মিষ্টির নাম রাখা হল ল্যাংচা। ময়রাকে প্রচুর ভূসম্পত্তি ও উপহার দিলেন মহারাজ। সেই ময়রা বর্ধমানের শক্তিগড়ে নতুন বসতি গড়ে তুললেন। ল্যাংচা ময়রার তৈরি লাংচার সুনাম তখন ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। দিনে দিনে বিখ্যাত হল শক্তিগড়ের ল্যাংচা।
ছানার সঙ্গে চালগুড়ি মিশিয়ে তা নোড়ার মতো আকার দেওয়া হয়। এর পর তা তেল বা গাওয়া ঘিয়ে ভাজা হয়। তারপর ফেলা হয় চিনির রসে। পাঁচ টাকা বা দশ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন- 'নিধন নয়, উদ্ধার করুন', সর্প রক্ষায় ৫১ বছর ধরে নবগ্রামে চলছে মনসা পুজো
আগে শক্তিগড়ের ছিল এই ল্যাংচার পসার। দুনম্বর জাতীয় সড়ক তৈরির পর ব্যবসার বেশিরভাগটাই গাংপুরের কাছে আমড়া এলাকার উঠে আসে। এখানে এখন শতাধিক ল্যাংচার দোকান রয়েছে। মূলত জাতীয় সড়ক ব্যবহারকারীরাই এখানের ক্রেতা।