কীভাবে তৈরি হয়? চলুন, পা বাড়াই পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রাম গোবরুতে। এখানকার মানুষদের কাছে শালপাতা শুধু একটা পণ্য নয়, জীবন-জীবিকার প্রধান ভরসা। ভোরবেলা থেকেই গ্রামের পুরুষ-মহিলা, এমনকি তরুণ-তরুণীরাও ছুটে যান জঙ্গলের দিকে। শালগাছের বড়, মজবুত পাতাগুলো তারা যত্ন করে সংগ্রহ করেন। কোনও ডাল না ভেঙে, গাছের ক্ষতি না করে পাতা তোলায় ওদের নিয়ম। ধীরে ধীরে ভাঁজ না ফেলেই সেই পাতাগুলো আনা হয় গ্রামে। ঘরে ফিরে শুরু হয় পরের ধাপ—পাতা সারি করে শুকোনো। রোদে শুকিয়ে পাতাগুলো আরও শক্ত হয়, টেকসই হয়। তারপর একটার ওপর আরেকটা সাজিয়ে, খুঁটিনাটি দেখে, সেলাই করতে বসেন গ্রামের মহিলারা।
advertisement
আরও পড়ুন: ভাল ফলন পেতে হবে আম-লিচুতে! অসম থেকে মালদহে হাজির ২৫ চাষি, নিলেন বড় প্রশিক্ষণ
সূঁচ, সুতো কিংবা মেশিন—যা আছে তাই দিয়েই তৈরি হয় গোল থালা, বাটি, কখনও প্যাকেটের মতো ভাঁজ করা পাতার পাত্র। তৈরি হওয়ার প্রতিটি ধাপে থাকে মানুষের স্পর্শ, শ্রম ও যত্ন। তাই এই থালায় খেতে গেলে খাবারটা শুধু খাবার থাকে না—থাকে প্রকৃতির গন্ধ, গ্রামের মানুষের পরিশ্রম, আর বাঙালির শেকড়ের একটা টান।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
আজ প্লাস্টিক আর থার্মোকলের দাপটে শালপাতার থালা হয়ত ততটা চোখে পড়ে না। তবে পরিবেশবান্ধব, স্বাভাবিক, আর একেবারে প্রাকৃতিক এই থালার গুরুত্ব নতুন করে বুঝছে পৃথিবী। আর তাই গোবরুর মতো গ্রামগুলো আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে শালপাতা শিল্পকে কেন্দ্র করে। শালপাতা শুধু একটি থালা নয়—এ আমাদের স্মৃতি, আবেগ, আর গ্রামের মানুষের।





