আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ‘অশনি’…! এখনই উঠবে বিরাট ঝড়-তুফান! বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মুষলধারে বৃষ্টি
এই এলাকার বহু মানুষ মূলত মৎস্যজীবী এবং দিনমজুর। তাঁদের ঘরবাড়ি, বাজার, রাস্তা—সবই সমুদ্রের খুব কাছাকাছি। বর্ষায় একটু বেশি ঢেউ উঠলেই তাঁদের বাড়ির উঠোনে জল ঢুকে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা আশীষ ভট্টাচার্য বলেন, “প্রতিবার জলোচ্ছ্বাসের সময় মনে হয় এবার বুঝি শেষ। বাঁধ ভেঙে গেছে, সরকার কিছু করে না।” এক গৃহবধূধ জানান, “ঘরে জল ঢুকে যায়। খাবার নষ্ট হয়। ছোট বাচ্চা নিয়ে এই দুর্দশায় থাকা যায় না।” প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর পর একবার বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ মাঝপথেই থেমে যায়। বর্তমানে কাল পাথরের মধ্যে ছড়িয়ে আছে ভাঙা কংক্রিটের চাঁই। অনেক জায়গায় বাঁধের অস্তিত্বই নেই। ঢেউ এসে সরাসরি ধাক্কা মারছে পাড়ে।
advertisement
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ‘অশনি’…! এখনই উঠবে বিরাট ঝড়-তুফান! বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মুষলধারে বৃষ্টি
এতে ভাঙন আরও বাড়ছে। বিশেষত বিশ্ববাংলা পার্কের সংলগ্ন এলাকায় ভাঙনের গতি বেশি। ওই অংশ থেকে সামান্য দূরেই রয়েছে শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর। যেকোনও বড় জলোচ্ছ্বাসেই বন্দর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধ ভেঙে গেলে শুধু বসতি নয়, মারাত্মক ক্ষতি হবে জেলার অর্থনীতিরও। শঙ্করপুর বন্দর থেকে প্রতিদিন বিপুল মাছ রফতানি হয়। এই বন্দর কার্যত মৎস্যজীবীদের প্রাণ। সেটি বিপন্ন হলে হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন। তার সঙ্গে ক্ষতি হবে রাজ্যের রাজস্বেরও। ভাঙা বাঁধ মানে শুধু একটি রাস্তা বা দেয়াল নয়—একটি অঞ্চলের জীবনরেখা ভেঙে পড়া। বছরের পর বছর ধরে শঙ্করপুরের ভাঙা সমুদ্রবাঁধ সংস্কার হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার পরিদর্শন হলেও, বাস্তবে কাজ কিছুই হয়নি। এর ফলে উপকূলবর্তী জনজীবন রোজ এক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। সামনে রয়েছে ষাঁড়াষাড়ির কোটাল। এই অবস্থায় দ্রুত কোনও ব্যবস্থা না নিলে, শঙ্করপুরে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্থানীয়রা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছেন—এটাই শেষ সুযোগ। ভাঙা বাঁধের জায়গায় স্থায়ী ও মজবুত সমুদ্রপ্রাচীর না হলে, পরবর্তী দুর্যোগে গোটা এলাকা জলের তলায় চলে যেতে পারে। শুধু ঘরবাড়ি নয়, ক্ষতি হবে বহু মানুষের জীবিকা, ভেঙে পড়বে মৎস্যবন্দর, বিপর্যস্ত হবে পর্যটন ও অর্থনীতি।





