বর্ধমানের উদয়চাঁদ মহিলা কলেজ থেকে ২০০০ সালে বিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন বর্ধমানের বাজে প্রতাপপুরের বাসিন্দা সুনীতা চৌধুরী। স্নাতক সম্পন্ন করার পর স্নাতকোত্তর করার ইচ্ছা ছিল সুনীতার। তবে শেষমেষ সেই ইচ্ছা আর পূরণ হয় না। তাঁর বিয়ে হয় একটা বড় পরিবারে। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই বার বার প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় সুনীতাকে। তিনি বলেন, “স্বামী খুব অত্যাচার করতেন। সেভাবে রোজগার করতেন না , আর খুব মদ খেতেন। জীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তাই বাধ্য হয়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি বর্ধমান এসে দই বড়া বিক্রি করতে শুরু করি।”
advertisement
বর্তমানে তাঁর বাড়িতে রয়েছে ছোট মেয়ে। মেয়েকে মানুষের মত মানুষ করে তোলাই এখন লক্ষ্য সুনীতার। এখন দই বড়া বিক্রিকরে যেটুকু উপার্জন হয় তা দিয়েই দিন কাটে মা মেয়ের। সংসারে প্রচুর অত্যাচার সহ্য করার পরেও হাল ছাড়েনি সুনীতা। নতুন করে বাঁচার তাগিদে মাথা উঁচু চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের ব্যবসা। সমাজের অন্যান্য মহিলাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “হার মানলে চলবে না, লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আর নিজের যেটা মনে হবে সেটা করা উচিত, আত্মসম্মানের সঙ্গে বাঁচা দরকার।”
দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসেন সুনীতার তৈরি দই বড়া খাওয়ার জন্য। ক্রেতারাও বেশ ভালই প্রশংসা করেন এই দই বড়ার। প্রথম দিকে সেভাবে বিক্রি না হলেও বর্তমানে বেশ ভালই বিক্রি হয় দই বড়া। অনেকে আবার এই দই বড়া পার্সেল করেও নিয়ে যান। সব মিলিয়ে জীবনযুদ্ধের লড়াইটা মাথা উঁচু করে চালিয়ে যাচ্ছেন বর্ধমানের সুনীতা।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী