এবার হাওড়ার জগৎবল্লভপুর ব্লকের অন্তর্গত মাজু চংঘুরালী ঘন্টেশ্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুণ দশা। এই স্কুলের সব মিলিয়ে মিলিয়ে মাত্র ২০ জন ছাত্র-ছাত্রী পাঠরত ছিল। আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে। সেই দিক গুরুত্ব রেখে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও গ্রামের শিক্ষা অনুরাগী মানুষ সরকারি এই স্কুল বাঁচাতে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক শিক্ষিকা প্রোগ্রামের মানুষ মানুষের কাছে পৌঁছোচ্ছেন স্কুল বাঁচানোর বার্তা নিয়ে। বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির আহ্বানে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা।
advertisement
আরও পড়ুন: চারা গাছ লাগালেই টাকার বন্যা! ৫-৬৪০ গাছ রোপণ করে উপার্জনের বাম্পার সুযোগ হাতের মুঠোয়
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
১৯৬২ সালে মাজুর চংঘুরালি গ্রামে কালিকাশ্রমের সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত হরিপদ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মাতা ঘন্টেশরী দেবীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে গ্রামের ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে চংঘুরালি ঘন্টেশ্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। চংঘুরালি দোতলায় প্রাচীন বকুল গাছের নিচে এগারো শতকের বিষ্ণুমূর্তির সন্নিধানে চার কক্ষবিশিষ্ট পাকা স্কুল ভবনটি রয়েছে। ওই স্কুলে ভবনের মধ্যেই চলছে একটি অঙ্গনওয়াডি সেন্টার।
আরও পড়ুন: লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিদিন দু’ঘণ্টা অনুশীলন, ক্য়ারাটে ট্রেনিংয়ে মিলবে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ!
বেশ কিছুদিন ধরে চংঘুরালি গ্রামের সেখ পাড়া, ষষ্ঠীতলা, হাজি পাড়া, মান্না পাড়ায় ঘুরে ঘুরে ছাত্র ভর্তির জন্য সচেতনতার প্রচার চালান হয়। প্রচারাভিযানে উপস্থিত ছিলেন–পার্থপ্রতিম পাত্র, প্রধান শিক্ষক চংঘুরালি ঘন্টেশ্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয়। তামসী ঘোষ, সহকারী শিক্ষিকা চংঘুরালি ঘন্টেশ্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয়। অরূপ রতন মাইতি, প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক ব্রাহ্মণপাড়া চিন্তামণি ইনস্টিটিউটশন। সমাজকর্মী ও শিক্ষক সৌরভ দত্ত। এলাকায় ঘুরে ঘুরে শিশু শিক্ষার্থীদের নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন জানান।
এ বিষয়ে গ্রামের নিকটবর্তী স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তির করার জন্য সকাতর আবেদন জানান হয়। স্কুল থেকে অবসরের পরেও ছাত্র দরদী শিক্ষক অরূপরতন মাইতি গ্রামে গ্রামে ঘুরে নিকটবর্তী ঘন্টেশ্বরী দেবীর স্মৃতিধন্য এই প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করে চলেছেন। ছাত্র খুঁজতে শিক্ষক শিক্ষিকারা বাড়ি বাড়ি অভিযান চালানো হচ্ছে বলে বিভিন্ন বিরূপ মন্তব্য ও ভেসে আসছে। তবু আশাবাদী শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন মানুষদের সকলের বিশ্বাস এই স্কুলও একদিন জিয়ন কাঠির স্পর্শে নতুন করে জেগে উঠবে। সে অপেক্ষাতেই দিন গুনছে গ্রামবাসীরা।
রাকেশ মাইতি





