ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর দু’নম্বর ব্লকের শিলদা এলাকায় বাড়ি সুব্রতবাবুর, পেশা শিক্ষকতা। দারুশিল্প তাঁর শখ। প্রায় বছর দশেকের বেশি সময় ধরে এই কাজ করে চলেছেন। জেলার গণ্ডি পেরিয়ে রাজ্যস্তরে পর পর দু’বার সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছেন। এখন তাঁর লক্ষ্য জাতীয় স্তরে পুরস্কার জয়।
আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই ‘অ্যাকশন’! বন্যপ্রাণীদের রক্ষায় জলপাইগুড়িতে নেওয়া হল বড় উদ্যোগ
advertisement
২০১৯ সালে সুব্রতবাবুর বানানো তাল আঁটির পাখি জেলা স্তরে সরকারি প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়। বছর তিনেক পর, ২০২২ সালে তাঁর বানানো কাঠের গিরগিটি জেলা স্তরে প্রথম এবং রাজ্য স্তরে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। সম্প্রতি রাজ্যস্তরীয় হস্তশিল্প প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন পেশায় শিক্ষক এই শিল্পী। তাঁর বানানো সেগুন কাঠের সাপ জিতে নিয়েছে পুরস্কার। সেই দারুসর্পের আঁশে খোদাই করা ছিল ২০০ প্রজাতির সাপের নাম।
কাঠের গণেশ, পেঁচা, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সহ প্রায় দেড়শটির কাছাকাছি হাতের তৈরি জিনিস বানিয়েছেন সুব্রতবাবু। তিনি জানান, অবসর সময় পেলেই কাঠ নিয়ে বসে পড়েন, বানিয়ে ফেলেন নানান সামগ্রী। স্থানীয়রা শিল্পীর শিল্পকর্ম এবং তাঁর নিত্যনতুন চিন্তাভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এতকিছুর মধ্যেও শিল্পীর আক্ষেপ, রাজ্যস্তরে প্রথম হলেও দিল্লিতে যাওয়ার কোনও সুযোগ হচ্ছে না।
প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম। বন্ধুর থেকে মিলেছিল দারুশিল্পের প্রাথমিক শিক্ষা। এরপর নিজের ইচ্ছেতেই অবসর সময়ে নানা ধরণের হস্তশিল্পের কাজ শুরু করেন সুব্রতবাবু। জানা যাচ্ছে, প্রথাগত ছবি আঁকার বদলে বরাবরই নিত্যনতুন শিল্পকলার সঙ্গে নিজেকে প্রকাশ করেছেন তিনি। ফেলে দেওয়া বিভিন্ন জিনিস দিয়ে বানিয়ে তোলেন ঘর সাজানোর সুন্দর জিনিস, ফুটিয়ে তোলেন নানান শিল্পকে।
সম্প্রতি সুব্রতবাবুর হাতে বানানো বেশ কিছু কাজ নজর কেড়েছে সকলের, মিলেছে প্রশংসা। বরাবরই ভিন্নস্বাদের শিল্পকর্ম করতে ভালবাসেন এই ব্যক্তি। এই ধরণের হাতের কাজ শুধুমাত্র শখ নয়, এটি তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে, এই কাজ তাঁকে মানসিক শান্তি এনে দেয় এবং একইসঙ্গে সমাজের জন্য কিছু করার অনুপ্রেরণা জোগায়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
নিজের শিল্পকর্মের জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে ফেলে দেওয়া কাঠ সংগ্রহ করেন সুব্রতবাবু। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন ইচ্ছা থাকলে সব রকম কাজই করা সম্ভব। পেশায় শিক্ষক এই শিল্পী বলেন, আমি স্কুলের সময় বাদ দিয়ে যেটুকু ফাঁকা সময় পাই, সেটা কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন জিনিস বানানোর জন্য মুখিয়ে থাকি। অন্যেরা যে সকল কাঠগুলি ফেলে দেয় আমি সেগুলিকে সংগ্রহ করি, সেগুলি নিয়ে নানান চিন্তাভাবনা করি এবং বিভিন্ন ধরনের জিনিস বানাই। দারুশিল্পের মাধ্যমে সমাজের নানা রকম বার্তার কথাও তিনি তুলে ধরেছেন, যা সমাদৃত হয়েছে সর্বত্র।