রক্ত দরকার একজনের। তার বদলে আর রোগিনীকে দেওয়া হল সেই রক্ত। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, একজনের জন্য আনা রক্ত দেওয়া হয়েছে অন্য রোগীনিকে৷ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে। জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের বলগোনা গ্রামের বাসিন্দা নমিতা মাঝি রক্তাল্পতার সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল বর্ধমান মেডিকেলের নিউ বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায়। চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তের প্রয়োজন হলে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত আনতে বলা হয়।
advertisement
ভাতারের বলগোনার বাসিন্দা নমিতা মাঝি রক্তাল্পতার উপসর্গ নিয়ে শনিবার সকালে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউ বিল্ডিং-এর তিনতলায় ভর্তি হন শনিবার। তাঁর পরিবারের লোকজনকে দুটি কাগজ দিয়ে ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনতে বলা হয়। নমিতা মাঝির ছেলে সঞ্জিত মাঝি বলেন, রক্ত আনার পর সেই রক্ত নমিতা মাঝির বদলে নমিতা বাগদি নামে অন্য একজনের শরীরে চালানো হয়। রোগিণীর পরিবারের দাবি, হাসপাতালের চরম অবহেলার ফলেই এমন বিপজ্জনক ঘটনা ঘটেছে। সঞ্জিত মাঝি বলেন,
“আমার মায়ের জন্য রক্ত আনা হয়েছিল। পরে জানতে পারি, সেই রক্ত অন্য রোগিণীকে দেওয়া হয়েছে। ভুল বুঝতে পেরে পরে খুলে নেওয়া হয়।”
ভুল রক্ত চলায় নমিতা বাগদীর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে তড়িঘড়ি আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন,
“ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোথায় ভুল হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নমিতা বাগদিকে রক্ত দেওয়ার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখনই টনক নড়ে সিস্টারদের। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত পরিবর্তন করা হয়। ওই রোগীনিকে আইসিইউ তে স্থানান্তরিত করা হয়। ৫৩ বছর বয়স্কা রোগীনি নমিতা মাঝির বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের তুলসীডাঙ্গা গ্রামে। তাঁর রক্তে হিমোগ্লোবিন কম ছিল। সেই জন্য তাঁকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনের কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। একই সাথে ওই ওয়ার্ডেই নমিতা বাগদী নামে আরও এক রোগিনী সর্পদংশনের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নমিতা মাঝির জন্য রক্ত লাগবে জানতে পেরে ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত আনেন তার ছেলে সঞ্জিত মাঝি। পরে তিনি তার বৌদিকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, তার মাকে রক্ত দেওয়া হয়নি।পরিবর্তে অন্যজনকে সেই রক্ত দেওয়া হয়েছে।যদিও পরে নাকি ভুল বুঝতে পেরে সেই রক্ত খুলেও নেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে।
এদিকে ভুল রক্ত চলায় নমিতা বাগদীর শরীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে তাকে আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে হাসপাতালে। হাসপাতাল সুপার তাপস কুমার ঘোষ বলেন, ঠিক কী ঘটেছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
