বৃহস্পতিবার স্যালাইন দেওয়ার পরই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি চারজন প্রসূতি৷ তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের সিসিইউ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দু জন৷ জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন আর এক প্রসূতি৷
আরও পড়ুন: ‘আমার বাড়িতে তো ইডি, সিবিআই তল্লাশি হয়নি!’ সাসপেন্ড হয়েই বিস্ফোরক শান্তনু, নিশানায় কে?
advertisement
তদন্তে উঠে আসে, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি সংস্থার তৈরি রিংগার ল্যাক্টেড স্যালাই দেওয়ার পরই ওই প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়৷ উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় তৈরি পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের এই স্যালাইনের গুণমান নিয়ে অবশ্য আগেই প্রশ্ন উঠেছিল৷ নভেম্বর মাসে এই রিংগার ল্যাক্টেড স্যালাইন খারাপ বলে কেন্দ্রীয় সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন৷ পরীক্ষার রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়, এই স্যালাইনের গুণমান ঠিক নয়৷ এই স্যালাইনের মান নির্দিষ্ট গুণমানের ধারেকাছেও নেই বলে উল্লেখ করা হয় রিপোর্টে৷ যে কারণে কালো তালিকাভুক্ত করা হয় পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস নামে ওই সংস্থাকে৷
কেন্দ্রীয় সরকারি ল্যাবরেটরির পাশাপাশি বিতর্কিত এই স্যালাইন নিয়ে গত মাসে একই মত দেয় কলকাতার কনভেন্ট রোডে অবস্থিত রাজ্য সরকারের স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরিও চোপড়ায় তৈরি ওই স্যালাইনকে কালো তালিকাভুক্ত করে৷ তার পরেও সেই বিষ স্যালাইনই রাজ্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের দেওয়া হচ্ছিল৷ শুধুমাত্র গাফিলতি, নাকি সব জেনেশুনেও ওই স্যালাইন সরকারি হাসপাতালে ব্যবহার করা হচ্ছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷
স্যালাইন কাণ্ডের তদন্তে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজ্য শাসক দফতর৷ আজই তদন্ত কমিটির দুই সদস্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছেছেন৷ ঘটনায় দু দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন৷
এ দিনই স্যালাইন কাণ্ডের প্রতিবাদে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বাইরে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় বাম এবং কংগ্রেস৷ পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয় বিক্ষোভকারীদের৷ বন্ধ করে দিতে হয় হাসপাতালের গেট৷
সহ প্রতিবেদন: শোভন দাস