জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে গবাদি পশুদের জন্য মজুত রাখা খাবার। এখনও জলের তলায় চারণভূমি। তাই কার্যত অভুক্ত অবস্থাতেই কোনও রকমে দিনযাপন করছে এই অবলারা। তাদের পাশে দাঁড়াতেই এক অভিনব উদ্যোগ নিল আমতার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা| এলাকাটি পূর্ব মেদিনীপুর হলেও হাওড়া থেকে সেখানে পৌঁছলেও অনেকটাই সুবিধা | পূর্ব মেদিনীপুরের মায়াচর আজ যেন মায়াহীন | সংস্থার তরফে সাধারণ মানুষের সাহায্যে রান্না করা খাবার সঙ্গে শুকনো খাবার পৌঁছয় প্রতিদিন | মানুষের সাহায্যে এগিয়ে হাওড়ার গ্রামাঞ্চলের এই যুবকদের নজরে আসে অবহেলিত এই গৃহপালিত পশুগুলি | সংস্থার তরফ এ বৃহস্পতিবার এলাকায় প্রায় ৫০ টি গৃহপালিত পশুর জন্য পৌঁছনো হল খাদ্য সামগ্রী | আগামী ১৫ দিনের জন্য ৫০টি গবাদি পশুর জন্য পৌঁছে দেওয়া হল খড় ও ম্যাস | এহেন অভিনব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।
advertisement
মায়াচরের বাসিন্দা রঘুনন্দন মান্নার কথায়, আমাদের এলাকায় মানুষকে খাবার দিলেও কেউ অবলাদের কথা ভাবে না। পর্যাপ্ত খড়, ম্যাস দেওয়ায় বহু গবাদিপশু প্রাণে বাঁচল। একসময় মনে করেছিলাম এই গবাদি পশুদের ছেড়ে আসবো অন্যত্র | মায়াচর মানুষের এখনও পর্যন্ত মায়া রয়েছে সেই কারণেই অনেক কষ্টে তাদেরকে রেখে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরের বাইরে | গ্রামের প্রতিটি মাঠ, চাষের জমি সবই এখন জলের গ্রাসে , প্রাকৃতিক খাবারও অমিল| সরকার প্রশাসনের তরফে মেলেনি কোনও সাড়া | সংস্থার তরফে এক স্বেচ্ছাসেবী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ) জানান , প্রাকৃতিক তান্ডবলীলার পর থেকেই আমরা এখানে আসছি সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে , আমাদের নজরে আসে এই অবহেলিত পুশুগুলি | যারা সারাবছর আমাদের খাদ্যখাদ্য যোগানের জন্য ঝড় জল রোদে পোরে, আজ তারাই ক্ষুদার্ত | আমরা ঠিক করি এদের পাশে থাকব আমরা | তখন থেকেই তাদের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করতে থাকি, লক ডাউনের জন্য সেই সামগ্রী মজুত করতে একটু সময় লেগেছে এবং এলাকাটি পুরোটাই জলের নিচে থাকায় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছেতেও সমস্যা হয়েছিল | মানুষের পাশে তো থাকতেই হবে৷ কিন্তু মায়াচরের আসল মায়া নজরে পড়েনি কারোর | আমরাও এই অবলা প্রাণীগুলির পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি | পরবর্তী কালে প্রয়োজনে আরও খাবার আমরা সরবারহ করব |