চিকিৎসক সন্দীপ পাড়ি বলেন, সাহসের উপর ভর করে আমি এই অপারেশন করেছি। দুর্ঘটনাগ্রস্থ যুবকের পরিবার বলছে, চিকিৎসকের জন্যই তাঁদের বাড়ির ছেলে প্রাণে বাঁচল। দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এখনও আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অভিজিৎ মাঝি।
আরও পড়ুন- ঘাতক টেবিল ফ্যানে জীবন শেষ দম্পতির! পাথরপ্রতিমার মর্মান্তিক ঘটনা ঘুম উড়িয়ে দেবে
advertisement
কেতুগ্রাম ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সীতাহাটি পঞ্চায়েতের নৈহাটি গ্রামের মনসাতলায় সরকারি নর্দমা তৈরির কাজ চলছিল। নর্দমার উপর কংক্রিটের ঢালাইয়ের জন্য মিস্ত্রিরা লোহার রড দিয়ে সাটারিং করে রেখেছিল। শনিবার রাত ন'টা নাগাদ অভিজিৎ বাড়ি ফিরবার সময় পা হড়কে সাটারিংয়ের উপর পড়ে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে অভিজিৎ মাঝি বলেন, 'নর্দমার উপর পড়ে গিয়ে আমি আর উঠতে পারছিলাম না। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে পাড়ার কয়েকজন দাদা এসে দেখে আমার পায়ে সাটারিংয়ের লোহার রড বিঁধে এফোঁড় -ওফোঁড় হয়ে আছে।' তাড়াতাড়ি হ্যাক্সার ব্লেড দিয়ে সাটারিং থেকে রড কেটে অভিজিৎকে উদ্ধার করে লোহার রড সহ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়।
চিকিৎসক সন্দীপ পাড়ি গভীর রাতেই অপারেশন করে শরীর থেকে রড বের করে দেন। চিকিৎসকের সাহসিকতায় এই যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলেন পেশায় রঙ মিস্ত্রি অভিজিৎ মাঝি।
অভিজিতের মা দীপালি মাঝি বলেন, 'আমাদের বাড়ির সামনেই নর্দমা। নর্দমা পার করে আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতে হয়। পঞ্চায়েত থেকে নর্দমা পাকা করার কাজ চলছে। ঢালাই করা হবে বলে মিস্ত্রিরা রড দিয়ে নর্দমার উপর বাঁধাই করে গিয়েছিল। রাতের অন্ধকারে আমার ছেলের নর্দমা পার হতে গিয়ে পড়ে যায়। সাটারিংয়ের রড পায়ে গেঁথে যায়। আমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। পাড়ার ছেলেরা আমার ছেলেকে হাসপাতালে এনেছে।'
আরও পড়ুন- গোটা গ্রামজুড়ে একই অসুখে আক্রান্ত প্রায় সকলে! ভয়ে কাঁপছে ডোমজুড়
পঞ্চায়েতের গাফিলতিতে এমন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন সীতাহাটি পঞ্চায়েত প্রধান বিকাশ বিশ্বাস। তিনি বলেন, সকালেই শুনলাম দুর্ঘটনার কথা। খুবই দুঃখজনক। আমরা পরিবারের পাশে সর্বোতভাবে আছি। অপারেশনের পর অভিজিৎ এখন অনেক সুস্থ। কথা বলছে। দু-একদিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ওকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান চিকিৎসক সন্দীপ পাড়ি।
রণদেব মুখোপাধ্যায়