রামপুরহাট, অক্ষয় ধীবর: বিয়ে করেছিল৷ কিন্তু, বিয়ের পরেও অন্য মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখত৷ সেই কারণেই ছ’বছর আগে ভেঙে গিয়েছিল সে বিয়ে৷ তার পরে এই শিক্ষক ফাঁদ পেতেছিল বারামেশিয়া গ্রামের মাত্র ১৩ বছর বয়সি এক আদিবাসী কিশোরীর জন্য৷ যে কি না, তাঁর স্কুলেরই ছাত্রী৷ নিহত ছাত্রীর পরিবারের দাবি, তাঁদের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল অভিযুক্ত শিক্ষক মনোজ পাল৷
advertisement
নিহত ছাত্রীর পরিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছে, তাঁদের মেয়ে ওই শিক্ষক বলেছিল, ‘‘তুই বড় হ, তোকেই বিয়ে করব৷ তোকে কোথাও যেতে দেব না৷’’ কিন্তু, সেই প্রস্তাবে মেয়েটি রাজি হয়েছিল কি না জানা যায়নি৷ ওই ছাত্রীর সহপাঠীরাও বলেছে, স্কুল, টিউশনের আসা যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীর রাস্তা আটকাত ওই শিক্ষক৷ পরিবারের অভিযোগ ওই শিক্ষক ক্রমাগত উত্ত্যক্ত করত তাঁদের মেয়েকে৷
গত ২৮ অগাস্ট টিউশন পড়তে গিয়ে আর ফরেনি মেয়েটি৷ ওই দিন থানায় যায় তার পরিবার৷ অভিযোগ, প্রথমে তাদের কথার নাকি কোনও গুরুত্বই দেয়নি পুলিশ৷ এমনকি বলেছিল, কোনও ছেলের সঙ্গে সে পালিয়ে গিয়েছে নাকি দেখতে৷ সেই সময়ও পুলিশকে ওই শিক্ষকের কথা পরিবারের তরফে বলা হয়েছিল বলে দাবি৷
এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর অভিযুকেত শিক্ষক মনোজ পালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ৷ কিন্তু, তথ্যপ্রমাণ না পেয়ে ছেড়ে দেয়৷ ফের গত মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় তাকে৷ মনোজই দেহ ফেলার জায়গা দেখিয়ে দেয়৷
বুধবার দিনভর শিক্ষককে জেরা করে পুলিশ৷ সূত্রের খবর, খুনের পরে ক্লাস সেভেনের মেয়েটির মৃতদেহ ২ টুকরো করেছিল সে৷ তার মধ্যে ২টি বস্তা উদ্ধার হয়েছে৷ দেহের নীচের অংশ এখনও পাওয়া যাচ্ছে না৷ পুলিশের সন্দেহ, এতে দেহ লোপাটে অন্য কেউ-ও জড়িয়ে থাকতে পারে৷
এলাকায় ওই শিক্ষকের ভাবমূর্তি খুব একটা ভাল ছিল না৷ সে যে বাড়িতে ভাড়া থাকত, সেখানেও পরিচারিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ধরা পড়ে গিয়েছিল সে৷ মনোজের স্ত্রী-ও জানিয়েছে, মনোজ অত্যন্ত খারাপ, বিকৃতকাম একজন মানুষ৷ বিয়ের পরেও সে একাধিক নারীতে আসক্ত ছিল৷ সে কারণেই ভেঙে যায় বিয়ে৷ মনোজের পেনড্রাভ, হার্ডড্রাইভ খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷