দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা-র হাত কারও মাথার উপরে পড়লেই নাকি তিনি হয়ে উঠতেন কোটিপতি। বিপুল সংখ্যক টাকা, বিশাল বাড়ি, গাড়ি ,জমি জায়গা গড়ে তুলতে খুব বেশি সময় লাগত না। খনি অঞ্চল সহ শিল্প অঞ্চলে এখন তাঁরা প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী।
আরও পড়ুন: রাজু ঝা হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়, তৈরি হচ্ছে দুষ্কৃতীদের স্কেচ
advertisement
আসানসোল- দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে কয়লার কারবারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই স্বীকার করছেন, দাদার আশীর্বাদ মাথায় পড়লে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হত না কাউকে। রাতারাতি শূন্য থেকে কোটিপতি হয়ে উঠেছেনও অনেকে। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে এমন নমুনা প্রচুর রয়েছে। তবে এই আশীর্বাদ পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হত। রাজু ঝা-র দলে নাম লেখানো অতটা সহজ ছিল না। তবে যাঁরা রাজুর আস্থা অর্জন করেছিলেন, তাঁদের অনেকেরই এখন প্রাসাদপম বাড়ি, লরি, ট্রলারসহ পাথর খাদান, ক্রাশার মেশিনের মালিক।
রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক, যিনি দীর্ঘ দিন খনি অঞ্চলে কর্মরত ছিলেন, তিনিও জানান যে, রাজু ঝা-র অনুগামীদের প্রাপ্য টাকা থেকে কোনওদিন বঞ্চিত করেননি। বিভিন্ন লোকদের বিভিন্ন রকমের দায়িত্ব দেওয়া ছিল। কারওর কাজ ছিল অবৈধ ভাবে কী করে কয়লা উত্তোলন করা যায় , কোন সময় কত শ্রমিক দিয়ে কাজ সম্ভব, এই সমস্ত কাজ কারবার দেখার দায়িত্বও দেওয়া ছিল রাজুর অনুগামীদের।
আরও পড়ুন: কোটি-কোটির প্রতারণা, সেক্টর ফাইভে রমরমিয়ে চলছিল ভুয়ো কল সেন্টার, গ্রেফতার ৫ মহিলা-সহ ৪১
আবার কয়েকজনের কাজ ছিল, রেল সাইডিংয় কতগুলি রেক থেকে কয়লা আনলোড হচ্ছে, সেই ওয়াগন এবং রেক পিছু দাদাগিরি ট্যাক্স আদায় করা। পাচার হওয়া কয়লা ঠিক ভাবে নির্দিষ্ট করিডর পেরোলো কি না সেই সব মনিটর করাও ছিল রাজু ঝা-র ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের কাজ। এর পাশাপাশি রাজু ঝা-র হোটেল, গাড়ির ব্যবসা, পেট্রোল পাম্প দেখভাল করার জন্যও আলাদা খাস ব্যক্তিদের নিযুক্ত করা হয়েছিল। রাজু ঝা-র হিসেব নিকেশ এবং পরামর্শ দেওয়ার জন্যেও বেশ কয়েকজন খাস ব্যক্তি কাজ করতেন।
এই সমস্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা আজ কোটিপতি। খাদানের দুনিয়া থেকে দাদার আশীর্বাদে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকজন ,যারা খনি অঞ্চলে দাদার খাস ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।