পুরুলিয়ার ভূমিপুত্র স্বামী নির্বানানন্দ মহারাজ। নডিহা জিমন্যাস্টিক ক্লাবের বিপরীতেই তাঁর বাড়ি। ১৯৬৭ সালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। তারপর দিল্লির উইলিংটন হাসপাতাল যা বর্তমানে রামমোহন লোহিয়া হাসপাতাল নামে পরিচিত, সেখানে এক বছর চাকরি করেন। এর পর ১৯৭০ সালে ‘এইমস’ থেকে এমডি, কার্ডিওলজির উপর ডিগ্রি অর্জন করেন। বেশ কিছুদিন ‘এইমস’-এ চাকরি করার পর তিনি বোকারো স্টিল সিটিতে চলে আসেন।
advertisement
সেখানে প্রাইভেটে প্র্যাকটিস করেন বেশ কিছু বছর। তার মাঝে চার বছরের জন্য বিদেশে চলে যান। এরপর দেশে ফিরে এসে তিনি পুনরায় প্র্যাকটিস শুরু করেন। বিরাট নাম-ডাক হয় তার। বোকারো স্টিল সিটিতে থাকাকালীন ১৯৮২ সালে স্বামী ত্র্যক্ষরানন্দ মহারাজের সংস্পর্শে আসেন তিনি। তারপরেই তার মধ্যে আধ্যাত্মিক ভাবের বিস্তার ঘটে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন সংসার জীবন ছেড়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করার। আর জি কর-এ ডাক্তারি পড়ার সময় তিনি কথা দিয়েছিলেন ডাক্তার হওয়ার পর তিনি পুরুলিয়ার মানুষের সেবা করবেন। আর সেই কথা রাখতেই তিনি ১৯৯৬ সালে পুরুলিয়ায় ফিরে আসেন।
তারপর থেকে দীর্ঘ এতগুলো বছর তিনি পুরুলিয়ার কেতিকা স্থিত রামকৃষ্ণ তারক মঠে সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন। রোগীরা খুশি মনে যা প্রণামী দেন তাই তিনি গ্রহণ করেন। ডাক্তার মহারাজের এই কর্মকাণ্ডে সদা সর্বদাই তাঁর ছায়া-সঙ্গী হয়ে থেকেছেন কানাই লাল দত্ত। প্রতিনিয়ত রোগী দেখার কাজে ডাক্তার মহারাজকে সহযোগিতা করেন তিনি।
বিনামূল্যে ডাক্তার মহারাজের কাছে চিকিৎসা করাতে পেরে অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন। তার এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রোগীরা। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন ‘শিব জ্ঞানে জীব সেবা’। স্বামী নির্বানানন্দ মহারাজ যেন সেই কথাই বাস্তবায়িত করে দেখাচ্ছেন পুরুলিয়ার রুখা শুখা মাটিতে। নাম, যশ প্রতিপত্তিকে উপেক্ষা করে জীব-সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি।
শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়





