বৃহস্পতিবার পুরীর একটি হোটেল থেকে মিতালি ও তার প্রেমিক কুমারীশ ঘোষের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বছর দুয়েক আগে কুমারীশের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল মিতালি। তার পরিণতি যে এমন হবে তা ভাবতে পারছেন না কেউই।
advertisement
বছর দশেক আগে পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার হরিহরপুত্র গ্রামের প্রশান্ত ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় বাঁকুড়ার সোনামুখীর তরুণী মিতালির। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান আছে। প্রশান্তর গ্রামে মুদিখানা ও তেলের ব্যবসা আছে।
সূত্রের খবর, এরইমধ্যে দু’বছর আগে মিতালি ঘোষ পাশের গ্রামের মাধবডিহির বাসিন্দা কুমারীশ ঘোষের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। মিতালি স্বামী প্রশান্ত ঘোষ জানান,পড়শিদের কাছে এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তিনি তাঁর স্ত্রীকে সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন।
মিতালি জানিয়েছিল, কুমারীশ তাঁকে মাঝে মধ্যেই বিরক্ত করে। এরপর প্রশান্ত তাঁর শ্বশুর বাড়িতে জানানোর পাশাপাশি কুমারীশের বাড়িতেও বিষয়টি জানান। তখনকার মতো ঝামেলা মিটে গেলেও কয়েক মাস আগে তাদের মধ্যে ফের সম্পর্ক তৈরি হয়। ফোনে যোগাযোগ হত।
বেশ কিছুদিন আগে প্রশান্ত হোয়াটসঅ্যাপে কুমারীশ ও তার স্ত্রী মিতালির একটি ছবি দেখতে পান। তার মেয়ে জানায় মায়ের সঙ্গে কুমারীশের ছবির কথা তাঁকে জানান প্রশান্ত। বিষয়টি জানাজানি হতেই মিতালি ছবিটি মোবাইল ফোন থেকে মুছে দেয়।
প্রশান্ত জানান, ৭ দিন আগে মিতালি মোবাইল ফোন আনতে যাচ্ছি বলে সোনামুখী যায়। তারপরই মোবাইলের সুইচ বন্ধ হয়ে যায়। তাঁকে ফোনে না পেয়ে শ্বশুর বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে শ্বশুর বাড়ি থেকে বলা হয় এখানে মিতালি আসেনি।
মৃতার ভাই বৃন্দাবন ঘোষ বলেন, জামাই প্রশান্ত তাদের বাড়িতে জানানোর পরই আমরা রায়না থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করি। পরে জানতে পারি, তাঁর বোন পুরীর একটি হোটেলে আছে। পুলিশকে সেই বিষয়টিও জানানো হয়।
তাঁর অভিযোগ, পুলিশকে জানানোর পরেই পুলিশ তৎপর হলে হয়ত তাঁর দিদিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা যেত। বৃহস্পতিবার স্বামী প্রশান্ত ঘোষের মোবাইলে ফোন আসে ওড়িশা পুলিশের পক্ষ থেকে।
ওড়িশা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে জানানো হয়, স্ত্রী মিতালি ঘোষের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে পুরীর একটি হোটেলের ঘর থেকে। প্রশান্ত জানান সোনামুখী যাবার নাম করে স্ত্রী সেদিন মিতালি সোনার গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
তবে কি খুনই করা হয়েছে মিতালি ও তাঁর প্রেমিককে? নিয়ে যাওয়া গয়না ও নগদ টাকা আত্মস্যাৎ করতেই কি এই কাণ্ড? নাকি অন্য কারও হাত রয়েছে এই রহস্যময় মৃত্যুর পিছনে? নাকি নেহাতই আত্মহত্যা? উত্তর খুঁজছে পুলিশ!