তাঁর হাতের জাদু একসময় মাদুরের উপর ফুটিয়ে তুলত অসামান্য সব শিল্পকর্ম। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে যেতে সবাই। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং-এর সারতা গ্রামের বাসিন্দা পুষ্পরানি জানা দু’হাতেই একসময় করেছেন কামাল। জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য, রাজ্য ছাড়িয়ে দেশের মানুষের কাছে উজ্জ্বল করেছেন গ্রামের নাম, গ্রামের মাদুর শিল্পের নাম। মসলন্দ মাদুর বুনে পেয়েছেন এই স্বীকৃতি। ১৯৮০ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নিলম সঞ্জীব রেড্ডির হাত থেকে পান রাষ্ট্রপতি পুরস্কার।
advertisement
আরও পড়ুন: একেই বলে ভাগ্যের খেলা! সংসার চালাতে আখের রস বিক্রি করছেন চিকিৎসক
বাবার বাড়িতে দড়ির মাদুর বোনা হলেও বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে শিখেছেন মসলন্দ মাদুর বোনা। দশটি হাত না থাকলেও হাতের দশ আঙুল যেন কথা বলত। তাঁর হাতে বোনা মাদুর আজ বিশ্ব ক্ষেত্রে সমাদৃত। তিন মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার। তিন মেয়ে উমা, সীমা ও টিয়া আজ মাদুর শিল্পী। দুই ছেলে প্রদীপ ও সুদীপও জানে মাদুরের কাজ। স্বামী অভিরাম জানা আজ আর নেই। তিনিও একজন প্রতিষ্ঠিত মাদুর শিল্পী ছিলেন। স্বামীর থেকেই শিখেছেন মাদুরের কাজ। পেয়েছেন একাধিক সম্মান। যখন মানুষের কাছে মেদিনীপুর যাওয়াও একটা বড় চিন্তার ছিল, তখনই তিনি দিল্লি গিয়ে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে এনেছেন পুরস্কার। এখনও সযত্নে গুছিয়ে রেখেছেন তাঁর প্রাপ্তিগুলো।
বয়সের ভারে এখন আর নিয়মিত মাদুর বুনতে পারেন না পুষ্পরানি। তবে শরীর সঙ্গ দিলে এখনও শুরু করে দেন কাজ। তাঁর হাতে বোনা মাদুরের আজও ব্যাপক চাহিদা আছে। তা হাজার হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
রঞ্জন চন্দ