বাঁকুড়ার রানীবাঁধ ব্লকের কুল্যাম গ্রামের বাঁধপাড়া, তেঁতুলডাঙ্গা, নীমপাড়া, শবরপাড়া সহ পাঁচ থেকে ছ’টি পাড়ায় সবমিলিয়ে বসবাস পাঁচ শতাধিক পরিবারের। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য এমনকি দৈনন্দিন বাজার হাট করতেও গ্রামের মানুষকে ছুটতে হয় স্থানীয় রুদড়া বাজারে। একসময় গ্রামের রাস্তা কাঁচা থাকলেও কুল্যাম পাল পাড়া ও শবর পাড়ার মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া জোড়খালের উপর কালভার্ট দিয়ে স্বচ্ছন্দে গ্রামের মানুষ যাতায়াত করত।
advertisement
বছর ছয়েক আগে গ্রাম সড়ক যোজনার বরাদ্দে দফায় দফায় গ্রামে যাওয়ার রাস্তা কংক্রিটের তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু ততদিনে মুখ থুবড়ে পড়েছে কালভার্টটি। বর্তমানে কালভার্টের একাংশ কার্যত অপর অংশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় নিত্যদিন জোড় খাল পারাপার করে স্কুল কলেজে যাতায়াত এমনকি অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এখন গ্রামবাসীদের কাছে বিভীষিকার আরেক নাম। বছরের অন্যান্য সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ কেউ ভেঙে পড়া কালভার্টের উপর দিয়ে যাতায়াতের দুঃসাহস দেখালেও বর্ষায় কালভার্টের ধারপাশ মাড়ানোর সাহস দেখাননা প্রায় কেউই।
বছর খানেক আগে ভাঙাচোরা এই কালভার্ট দিয়ে জোড়খাল পারাপার করতে গিয়ে প্রাণ গেছে একজনের। বছরভর লেগেই থাকে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। অগত্যা ঝুঁকিপূর্ণ ওই কালভার্টের উপর দিয়ে যাতায়াত এড়াতে অনেকেই পাকা রাস্তা ছেড়ে ঘুরপথে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ভাঙাচোরা কাঁচা রাস্তায় যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবী বিষয়টি তাঁরা বারংবার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ সর্বস্তরে জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি।
প্রশাসনের এই উদাসীনতার জন্য শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের গড়িমসিকেই দূষছে বিজেপি। যদিও শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের দাবী গ্রামবাসীদের সমস্যার কথা তাঁদের অজানা নয়। ওই কালভার্ট নতুন করে তৈরীর জন্য পরিকল্পনাও করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে। কিন্তু কবে শুরু হবে সেই কাজ? কবেই বা ফের স্বচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারবেন মানুষ সেদিকেই তাকিয়ে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রাম কুল্যাম।
প্রিয়ব্রত গোস্বামী