একসময় পয়লা বৈশাখ মানে বাঙালি ব্যবসায়ীদের কাছে ছিল নতুন বছরের নতুন করে হিসাব শুরুর দিন। হালখাতা নামে পরিচিত এই প্রথা ছিল পুরনো বছরের যাবতীয় হিসেব নিকেশ মিটিয়ে নতুন করে ক্রেতা এবং বিক্রেতার পথ চলার প্রতীক। কিন্তু আধুনিকতার ঢেউয়ের ঝাপটা আর ডিজিটালাইজেশনের ধাক্কায় ক্রমশই গুরুত্ব হারাচ্ছে বাঙালির ঐতিহ্যের হালখাতা। তবে বিক্রেতাদের দাবি অনলাইন লেনদেনের যুগে বাঙালির জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পয়লা বৈশাখের হালখাতা।
advertisement
হাল শব্দের অর্থ নতুন। প্রতিবছর প্রজারা তাঁদের খাজনা, দেনা-পাওনা মিটিয়ে নতুন বছরে নতুন খাতা করতেন। পরবর্তী সময় বাংলায় সেই প্রচলন থেকে যায়। যারা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা বাংলার নববর্ষে এই নতুন খাতা পুজো করাতেন। তবে হিসেব নিকেশের সেই খাতা যুগের সঙ্গে অতীত হয়েছে। তার জায়গা নিয়েছে কম্পিউটার আধুনিক সফটওয়্যার। তাই হালখাতার বিক্রির হাল তলানিতে। বিশেষ করে আগের প্রজন্ম তবু এই খাতা কেনাকাটা করলেও এই প্রজন্ম একদমই কিনছে না বলেই দাবি বিক্রেতাদের।
আরও পড়ুন : লক্ষাধিক ভক্ত সমাগম! রাম নবমী উপলক্ষে হাওড়ার রামরাজাতলায় ৪ মাস ধরে চলে উদযাপন
একসময় পয়লা বৈশাখের দিন ব্যবসায়ীরা মন্দিরে পুজো দিয়ে সেখানে হালখাতা ঠাকুরের পায়ে ছুঁইয়ে নিতেন। আবার অনেকেই নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে লক্ষ্মী -গণেশের পুজো করার পর তাঁদের পায়ের কাছে যে হালখাতা রাখতেন তাতেই পরবর্তীকালে সারা বছর যাবতীয় হিসাব-নিকেশ করতেন।
তবে হালখাতার চাহিদা কমলেও সেই পুরনো ঐতিহ্য গত কয়েক বছর ধরে বজায় রেখেছেন বহরমপুরের কিছু ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা জানান, ‘হালখাতা হল নববর্ষের দিন ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকদের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়ার একটি দিন। বহু আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও এখনও আমি আমার দোকানে হালখাতা কিনে ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে এই দিনটি পালন করি।’