প্রথম দিকে কেউ তেমন গুরুত্ব না দিলেও কুকুরটির অস্থিরতা বাড়তেই থাকে। চিৎকার, দৌড়ঝাঁপ আর উদ্বিগ্ন আচরণ দেখে পরিবারের সদস্যরা অবশেষে বাইরে বেরিয়ে আসেন। আর বেরোতেই তাঁদের চোখে পড়ে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন।
যাদবপুর গ্রামে বৃন্দাবন জানার মাটির দোতলা বাড়ির পিছনের বারান্দায় আগুন লেগে ইতিমধ্যেই ছড়াতে শুরু করে শিখা। আগুন দেখে প্রথমেই চিৎকার করে ওঠেন বাড়ির মহিলারা। সেই চিৎকার গ্রামে পৌঁছতেই ছুটে আসে আশপাশের মানুষজন। কেউ বালতি করে জল, কেউ আবার ভেজা কাপড়—যা হাতের কাছে পান তাই নিয়ে আগুন নেভানোর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিছু সময়ের চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবুও ততক্ষণে পুড়ে যায় পোষাক পরিচ্ছদ সমেত বেশ কিছু জিনিসপত্র। বারান্দার কাঠামোতেও ক্ষতি হয়েছে। বৃন্দাবন জানার মেয়ে লক্ষ্মী বলেন, “সম্ভবত ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লাগে। তাঁর কথায়, “আমাদের কুকুরটা এত জোরে চিৎকার না করলে আমরা কিছুই বুঝতাম না। ওই ছিল বলে সবাই বেঁচে গেলাম।”
advertisement
গ্রামবাসীরাও একবাক্যে বলছেন, “কুকুরটি সতর্ক না করলে বাড়িটি মুহূর্তে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যেত”। ঘটনার পরে পরিবারের সকলের আবেগ যেন পোষ্যটির দিকেই। আদর করা, খাওয়ান, যত্ন করা—সবই যেন একটু বেশি করে দেওয়া হচ্ছে আজ তাকে। বাড়ির ছোট-বড় সবাই এসে আলতো করে ছুঁয়ে দিচ্ছেন সেই নায়ক কুকুরটিকে, যে নিজের প্রভুর প্রাণ বাঁচিয়েছে। গ্রামের বহু মানুষও আজ বিশেষভাবে এসে দেখছেন তাকে—যেন একবার চোখে দেখা হোক সেই চারপেয়ে হিরোকে। যাদবপুর গ্রামে আজ একটাই আলোচনা—“মানুষের থেকেও বেশি বিশ্বস্ত, বেশি সচেতন আমাদের পোষ্য কুকুরটিই।” প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষতি না হওয়ায় সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। পরিবারের কাছে সবচেয়ে বড় বিষয়—তাদের পোষ্যটি সময়মত সতর্ক করে সবাইকে বাঁচিয়েছে।
এক কথায়, যাদবপুরের আজকের নায়ক।





