TRENDING:

তিনিই বদলে ছিলেন বাংলার ইতিহাস! তবুও কেন ব্রাত্য বিদ্যাসাগরের এই কাছের মানুষ? জানলে অবাক হবেন

Last Updated:

Bangla News: তিনিই বদলেছিলেন গোবরডাঙ্গা সহ গোটা বাংলার ইতিহাস, তবুও যেন ব্রাত্যই থেকে গিয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের এই কাছের মানুষ!

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
উত্তর ২৪ পরগনা: একসময় চক্ষুশূল হওয়ায় গোবরডাঙ্গায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তার উপর, পরবর্তীতে তিনিই আমুল বদলে দিয়েছিলেন ঐতিহ্যের শহর গোবরডাঙ্গার ইতিহাস। তবে আজও যেন ব্রাত্যই থেকে গিয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অতি কাছের এই মানুষ। ভাবছেন কে! তাঁকে জানতে ইতিহাসের পাতা উল্টে পিছিয়ে যেতে হবে বেশ কিছু বছর। ১৮৫৬ সালের ডিসেম্বর, সময় বলা যায় রাতের দ্বিতীয় প্রহর।
গোবরডাঙ্গা
গোবরডাঙ্গা
advertisement

কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটের রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তখন ভিড় নিমন্ত্রিতদের। প্রায় ৮০০ জনকে কার্ড দিয়ে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। রাস্তায় পুলিশের পাহারা চলছে। এমন সময় পালকি চেপে বিয়ে করতে এলেন মুর্শিদাবাদের জজ পন্ডিত শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। পাত্রী কালীমতি বর্ধমানের পলাশডাঙার প্রয়াত ব্রক্ষানন্দ মুখ্যোপাধ্যায়ের দশ বছরের বিধবা মেয়ে। কালীমতির প্রথম বিয়ে হয়েছিল চার বছর বয়সে। বিধবা হন ছয় বছর বয়সে। কালীপ্রসন্ন সিংহ, রমাপ্রসাদ রায়, নীলকমল মুখ্যোপাধ্যায়, প্যারীচাঁদ মিত্র, রামগোপাল ঘোষ-সহ আরও অনেকের উপস্থিতিতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিদ্যাসাগর কনের মা লক্ষ্মীদেবীকে দিয়ে কন্যা সম্প্রদান করালেন।

advertisement

রাতে হাওড়ার দিকে ছুটছিল ট্রেন, AC কোচে টহল দেওয়ার সময় RPF-এর চোখে পড়ল ‘অদ্ভুত’ এই জিনিস! এগুলো কী?

১১৫ বছর বাঁচতে চান? বিজ্ঞানীরা বলে দিলেন সহজ ৫ ‘উপায়’! সঙ্গে প্লেট থেকে বাদ দিন এই ৩ জিনিস!

সেই সঙ্গে ওই দিনটি ঘিরে তৈরি হল এক ইতিহাস। বিধবাবিবাহ আইন পাশের পর বিদ্যাসাগর বিস্তর খরচ করে প্রথম বিধবা বিবাহের জমকালো ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। ভারতের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রইল প্রথম বিধবা বিবাহের দিনটি। সেই দিনের বিধবা বিবাহ নিয়ে পরবর্তীতে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে। পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গার খাঁটুরার বাসিন্দা শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন প্রথম বিধবা বিবাহ করে চক্ষুশুল হয়ে উঠেছিলেন তৎকালীন সমাজে। এমন কাজের পর এই সমাজ সংস্কারককে বিশেষ মর্যাদা দেয় ব্রিটিশ সরকার। বনগাঁর ডেপুটি ম্যাজিস্টেট পদে উন্নিত হন শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন।

advertisement

পরবর্তীতে ১৮৭০ সালে গোবরডাঙ্গা পৌরসভা স্থাপিত হলে প্রথম পৌরপিতা হন শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। বিধবা বিবাহ করার পর শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে অনেক প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল বলে জানালেন গোবরডাঙ্গার বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ পবিত্র মুখ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, সমাজ সংস্কারক শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে শুধুমাত্র্র বিধবা বিবাহ করার জন্য গোবরডাঙ্গায় তার পৈত্রিক ভিটেতে আসতে নিরুৎসাহিত করেন তৎকালীন ব্রাক্ষণ সমাজ। স্ত্রী কালীমতি দেবীর মৃত্যুর পর সমাজ ব্যবস্থার চাপে প্রায়শ্চিত্ব করে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে আসতে হয় গোবরডাঙ্গায় তার পৈত্রিক ভিটেতে। প্রথম পৌরপিতা হয়ে তিনি গোবরডাঙ্গার উন্নয়নে এনেছিলেন আমুল পরিবর্তন।

advertisement

গোবরডাঙ্গার পৌরসভা স্থাপন, রেললাইন স্থাপন সহ পৌর এলাকায় রাস্তাঘাট সংস্কার করে গোবরডাঙ্গার ভোল পাল্টে দেন তিনি। শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন ছিলেন গোবরডাঙ্গা পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত পৌরপ্রধান। ইতিহাসবিদ পবিত্র মুখ্যোপাধ্যায় আক্ষেপ করে জানালেন, গোবরডাঙ্গার গর্ব তিনি। অথচ শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নের স্মৃতি সেভাবে দেখা যায় না। বলা ভাল সংরক্ষণ করা হয়নি।

এমন একজন সমাজ সংস্কারক তথা শিক্ষাবিদের বসত ভিটে আজ নিশ্চিহ্ন। তবে ১৮৬৮ সালে তার মায়ের নামে গোবরডাঙ্গার কঙ্কনা বাওড়ের ধারে গড়ে তোলা জোড়া শিব মন্দিরের অস্তিত্বটুকু বর্তমান রয়েছে। যা হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে কিছুদিন আগেই। শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন প্রথম নির্বাচিত পৌরপ্রধান, সেটুকু স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে পৌরসভার পক্ষ থেকে খাঁটুরায় তার বাড়ির সামনের রাস্তাটির নামকরন করা হয়েছে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন সরনী। পৌরসভায় খোদাই করা রয়েছে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন ভবন নামটিও।

advertisement

গোবরডাঙ্গার ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই মানুষটিকে স্মরণ করতে বা নতুন প্রজন্মের কাছে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নের পরিচয় তৈরি করে দিতে বিগত এতগুলো বছরেও তেমন ভুমিকা দেখা যায়নি পৌরপ্রশাসনের পক্ষ থেকে বলেও আক্ষেপ এই ইতিহাসবিদের। শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন আজও অবহেলায় থাকলেও, তার অবদানকে যেন কখনওই ভুলতে পারেননি গোবরডাঙ্গার শিক্ষিত সমাজ।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুজো শেষ হতেই ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মার ইলিশ! জলের দরে টাটকা মাছ না খেলেই নয়
আরও দেখুন

Rudra Narayan Roy

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
তিনিই বদলে ছিলেন বাংলার ইতিহাস! তবুও কেন ব্রাত্য বিদ্যাসাগরের এই কাছের মানুষ? জানলে অবাক হবেন
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল