দোলতলায় ওই বেপরোয়া ট্রাককে থামাতে এরপরই ময়দানে নামে পুলিশ প্রশাসন থেকে স্থানীয় মানুষজনও। কিন্তু না, একের পর এক সামনে থাকা ছোট বড় গাড়িকে ধাক্কা মেরে, পথ চলতি মানুষদের পিষে দেওয়ার উপক্রম হয় যশোর রোডে। সেই অবস্থাতে বিভিন্ন সিগনালে গাড়ি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হলেও, সবকিছুকে অগ্রাহ্য করেই দ্রুত গতিতে চালক এগিয়ে নিয়ে চলে ওই দীর্ঘ কন্টেনার ট্রাক টিকে। এরপর মধ্যমগ্রাম চৌমাথা এলাকায় ট্রাফিক এর দায়িত্ব সামলানো পুলিশ কর্মীরা সহ সিভিক ভলেন্টিয়ার রাও নানা রকম ভাবে ওই চালককে আটকানোর চেষ্টা চালান। তা দেখে আরও গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন বেপরোয়া ড্রাইভার। রাস্তার সামনে থাকা মানুষজন এমন ঘটনা দেখে যে যেদিকে পারছে প্রাণ বাঁচাতে ছুটছে তখন, কখনো দু চাকার গাড়ি কখনও চার চাকার গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েই বারাসাতের দিকে এগিয়ে যায় ট্রাকটি।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
জেলা ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরাও পিছু নেয় ট্রাকটির। ততক্ষণে ডাকবাংলো মোড় পৌঁছে গিয়েছে ওই বেপরোয়া গতির ডেলিভারি কন্টেনার গাড়িটি। এখানেই শেষ নয়, এরপর ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরার জন্য ডাকবাংলো মোড় থেকে গাড়ি বাঁদিকে বেকাতেই, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় তিনটি দু চাকার গাড়িকে ধাক্কা মারে সেটি। গাড়ির সামনেই আটকে পড়ে ওই দুই চাকার যান গুলো। এরপর ওই দু চাকার জান গুলিকে ঠেলে প্রায় কয়েকশো মিটার এগিয়ে নিয়ে যায় ট্রাকটি ।
তবে দীর্ঘ সময় রাস্তায় ঘষার কারণেই দু চাকার গাড়ি গুলিতে লেগে যায় আগুন। এমন ঘটনা দেখে তখন যেন হতবাক রাস্তার দুপাশে থাকা পথ চলতি মানুষজন থেকে ব্যবসায়ীরাও। দাঁড়িয়ে যায় জাতীয় সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করা যানবাহনও। এরপর সেই অবস্থায় আরও কিছুটা ছুটে, হেলাবটতলার কাছে এসে থামে ঘাতক ট্রাকটি। দেখা যায় আগুন লেগে গিয়েছে গোটা কনটেনার গাড়িতেই। এরপরই ঘটনাস্থলে আসে দমকল ও পুলিশ। ততক্ষণে অবশ্য চম্পট দিয়েছিল চালক। এখানেই সকলের প্রশ্ন উঠে কী এমন কারণে এত বেপরোয়া হয়ে মানুষ মারার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এগোতে হল ওই গাড়ির চালককে! কি রয়েছে কন্টেইনারের ভেতর!
পরিস্থিতি সামাল দিতে তখন জেলা প্রশাসন এর উচ্চপদস্থ কর্তারাও নেমে পড়েছেন মাঠে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায় উঠে আসছে সেই বীভৎস মুহূর্তের বর্ণনা। কেউ প্রাণে বেঁচেছেন অল্পের জন্য, কারোর শখের দু’চাকা গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। যদিও এখনও পর্যন্ত প্রাণহানির কোনও খবর মেলেনি তবে অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন বহু মানুষজন বলেই জানা যাচ্ছে প্রশাসনের তরফে। এরপরই জেলা পুলিশ ঘাতক ট্রাকের চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে এলাকায়।
অবশেষে বারাসাত থানার পুলিশ আটক করে ঘণ্টাখানেক ধরে জেলার বুকে ঝড় তোলা বিপদের মূল কান্ডারীকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় জেলা প্রশাসনকে। জাতীয় সড়ক সাময়িক অবরুদ্ধ হয়ে পড়লেও, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে গোটা ঘটনা তদন্তে নেমেছে জেলা পুলিশ। কেন, কী কারণে তিনি এমন কাণ্ড ঘটালেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পথ চলতি মানুষজন থেকে সাধারণ মানুষ বলছেন আজ বড় বিপদের হাত থেকে বাঁচল বহু প্রাণ।
Rudra Narayan Roy





