সেই রাজু মল্লারপুর রেল স্টেশনের ওভার ব্রিজের নিচে বিভিন্ন সংবাদপত্র বেঞ্চিতে লাগিয়ে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। স্টেশনে আসা সংবাদপত্রের পাঠকরা ওভার ব্রিজের গ্রিলের ফাঁক দিয়েই নিজের পছন্দের কাগজ নিয়ে পাশেই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় কাগজের নির্দিষ্ট দাম রেখে চলে যান। কোনও পাহারাদার নেই, নেই কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা। শুধু বিশ্বাসের উপর ভরসা করে মল্লারপুর স্টেশনে এই ‘পেপার এটিএম’ চলছে গত কয়েক বছর ধরে।
advertisement
আরও পড়ুন: রাস্তা তৈরি নিয়ে বিবাদে জড়াল শাসকদলের দুই পক্ষ, সিঙ্গুরে চ্যালা কাঠ নিয়ে তাড়া করারর ভিডিও ভাইরাল
মূলত উন্নত দেশে বিমানবন্দর থেকে শহরের ভিতর মানবহীন যন্ত্র নির্ভর ব্যবসা চলে। যা প্রচলিত ‘এআই নির্ভর শোরুম’ হিসাবে। সেখানে কার্ড সোয়াইপ করে আপনি দোকানে ঢুকলেই মানুষ না থাকলেও সিসিটিভির নজরদারিতে চলে আসেন। খরিদ্দার নিজের পছন্দের জিনিস কিনে বাইরে বের হলেই যন্ত্র তাঁর মোবাইলে পাঠিয়ে দেয় বিল। কিন্তু বাংলায় কোনও নজরদারি ছাড়া সংবাদপত্র নিজের বিশ্বাসে টেবিলে সাজিয়ে চলে যাচ্ছেন এক হকার। অথচ বিন্দুমাত্র নজরদারি নেই। এভাবেই দেদার বিক্রি হচ্ছে সংবাদপত্র। ‘পেপার এটিএম’ থেকে প্রতিদিন সংবাদপত্র সংগ্রহ করা এক গ্রাহক রাজকুমার দাস জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই কাগজ নিয়ে চলে যান। কিন্তু একটি দিনের জন্যও টাকা না দিয়ে কাগজ নিয়ে চলে যাওয়া বা ওখানে রাখা টাকা চুরি যাওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি।
পেপার এটিএমের উদ্ভাবক রাজু লেট জানান, যাঁরা শিক্ষিত বিশেষত তাঁরাই এখন খবরের কাগজ পড়েন। তাঁরা কখনও মানুষকে ঠকান না। আমি মানুষকে বিশ্বাস করি। তাঁরা আমায় ভালোবাসেন। এমনও অনেকদিন গিয়েছে, খুচরো নেই। এক সপ্তাহ কাগজের দাম দিতে পারেননি। পরে এসে একসঙ্গে কাগজের দাম রেখে গিয়েছেন। আমার লক্ষ্য মানুষকে খবরের কাগজ পড়ানো। পাঠক বাড়লে আমরা বাঁচব।
সৌভিক রায়