বাংলা সীমান্ত পেরিয়ে ওড়িশায় প্রবেশ করেছে সুবর্ণরেখা নদী। নদীর পূর্ব পাড়েই এই জমিদারবাড়ি। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বেশ পুরনো এই দুর্গাপুজো। তৎকালীন সময়ে বাংলা ও ওড়িশা একসঙ্গে থাকায় রাজবাড়ির দুর্গাপুজোতে মেতে উঠতেন বাংলা ও ওড়িশার মানুষজন। তবে পরবর্তীতে বাংলা এবং ওড়িশা ভাগ হয়ে যাওয়ার পরেও ভাটা পড়েনি এই আনন্দ উৎসবে। প্রায় দু’মাসের সময় ধরে তৈরি হয় দেবী দুর্গার মৃন্ময়ী প্রতিমা।
advertisement
বাংলার কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়, খড়গপুর, এমনকি কলকাতা থেকেও বহু মানুষ লক্ষ্মণনাথের পুজো ও মেলা দেখতে ভিড় জমান। এখানকার পুজোয় জড়িয়ে আছে নানা কাহিনি আর কিংবদন্তি। ইতিহাসটা বেশ দীর্ঘ। জানা যাচ্ছে, লক্ষ্মীনারায়ণ রায় বাড়ি তৈরি করেন। গড়ে তোলা হয় ‘অষ্টাদশ শম্ভুর’ মন্দির। আছে অন্নপূর্ণা ও জগন্নাথ দেবের মন্দির। জমিদারবাড়ির কুলদেবী ছিলেন শ্যামাসুন্দরী। এখনও দুবেলা পুজো হয়। প্রজারঞ্জনের জন্য শুরু হয় দেবী দুর্গার পুজো।
আরও পড়ুন : ৪০০ টি স্লেটের উপর শিল্পীর হাতের তক্ষণে বিকশিত শত দুর্গা
এখনও সুদৃশ্য জমিদার বাড়ি, মণ্ডপ, নহবতখানা সবই আছে। জমিদারবাড়ির একছত্র পুজো আজ গ্রামবাসীদের বেশিরভাগ সহযোগিতায় সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। এই পুজো উৎকল-বঙ্গের মৈত্রী উৎসবে পরিণত হয়। পুজোর দিনগুলিতে বসে বিরাট মেলা। বাজে নহবত। প্রতিমা হয় উনিশ ফুটের। জানা যায়, নবমীতে বিশেষ উপাচার সাজানো হয়। দুই ক্যুইন্টাল নৈবেদ্য তথা আতপ চাল-সহ বিভিন্ন ফল প্রসাদ হিসেবে দেবীকে দেওয়া হয়। দশমীতে দেবীর বিসর্জনের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় জমিদার বাড়ির ঐতিহ্য তলোয়ার। তিনশো বছরেরও বেশি পুরানো এই পুজো।