মা পালালেন প্রেমিকের সঙ্গে, ৯ বছরের ছেলে ২ বছর ফ্ল্যাটে একা…খাবার নেই! কী হল তার পর? শিউরে উঠবেন
এখনও নিজের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন সংগ্রাম। তবে আর পাঁচজনের মত সাধারণ জীবনযাপন ছিল নমিতা দেবীর। বিয়ে হয়, ঘর সংসার হয়, তবে বেশ কয়েকবছর আগে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন, স্বামী বাড়ি থেকে বের করে দেয় নমিতা দেবীকে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাপের বাড়ি গেলে সেখানেও বেশি দিন থাকতে পারেননি তিনি।
advertisement
২২ তরুণী…১ নাবালক! হোটেলের ঘরে সারা রাত চলল ‘অদ্ভুত’ এই কাণ্ড! পুলিশ এসে দরজা খুলতেই, চোখ কপালে!
ত্বকে বলিরেখা? এখনই ঘুরিয়ে দিন ঘড়ির কাঁটা! ‘কিশমিশ’ ব্যবহার করুন এইভাবে…বয়স উল্টোদিকে হাঁটবে!
কিছুদিনের মধ্যে জন্ম দেন কন্যাসন্তানের। মেয়ে জন্মানোর কয়েকমাসের মধ্যে আবার স্বামীর কাছে গেলেও সেখানেও বেশিদিন টিকতে পারেননি। তারপর একরকম আশ্রয়হীন হয়ে শুরু হয় তার জীবন সংগ্রাম। জৌগ্রামে টিনের একটি চালাবাড়ি ভাড়া নিয়ে মেয়েকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন তিনি। তার পর রুজি রুটির তাগিদে এবং মেয়েকে বড় করে তোলার জন্য শুরু করেন ট্রেন হকারি।
সবজি বিক্রি করে বহু কষ্টে তার দিন অতিবাহিত হত। তবে ভাগ্যের পরিহাসে ট্রেন দুর্ঘটনায় বাম হাত কাটা যায় নমিতা দেবীর। কিন্তু হাত কাটা গেলেও তিনি থেমে থাকেননি। মনের মধ্যে ছিল অদম্য জেদ এবং মেয়েকে মানুষ করার ইচ্ছাশক্তি। সেই সুবাদে কিছুদিন পর একহাত নিয়েই তিনি আবারও ট্রেন হকারি করতে শুরু করেন।
নমিতা ধারা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, \”মেয়ে দাঁড়াতে শিখেছে তখন থেকে হকারি করছি, আজ ১৬ বছর হয়ে গেল। অনেক পরিশ্রম করতে হয় আমাকে। দই লস্যি, শসা, সবজি সহ বিভিন্ন জিনিস আমি বিক্রি করি।\” নমিতা দেবীর পায়েও সমস্যা রয়েছে, ঠিকমত হাটতে পারেন না তিনি। তবে হাজারও সমস্যা থাকলেও তিনি এখনও লড়াই করে চলেছেন।মেয়ের পড়াশোনা, নিজেদের আহারের ব্যবস্থা সবকিছুই একা হাতে সামলাতে হয় তাকে। রান্না করা, সবজি কাটা,ঘর মোছা, মেয়ের দেখভাল করা, ট্রেনে কি বিক্রি করবেন সেই জিনিস সাইকেলে করে নিয়ে আসা,তারপর ট্রেনে হকারি করতে যাওয়া।
সবমিলিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্রাম নেওয়ার সময় থাকেনা তার। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর নিজে কিছু করার ইচ্ছা ছিল। তাই এই পেশা বেছে নিয়েছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে পরিশ্রম। ডাউন লাইনে ট্রেনে বেলুড় অবধি গিয়ে ফের ফিরে আসেন জৌগ্রামে।
নমিতা দেবীর মেয়ে বর্তমানে নবম শ্রেণীর ছাত্রী। সামনের বছর সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। মেয়েকে নিয়ে একরাশ স্বপ্ন রয়েছে তার। আপাতত মেয়ে মানুষের মত মানুষ হোক এটাই তার ইচ্ছা। মেয়ের জন্য মায়ের এই কঠিন লড়াই সত্যিই একেবারে ভিন্ন!
বনোয়ারীলাল চৌধুরী