প্রান্তিক এলাকায় থেকে পৈত্রিক সম্পত্তিতে চাষাবাদ করে সংসার চালান। তবে পরিচিতি তাঁর কলমের জোরে। এখনও লিখে চলেছেন নানা লোক সংস্কৃতি বিষয়ে। তৎকালীন সময়ে স্নাতক পাস করেছেন, করেছেন বি এড-ও। তবে চাকরি করেননি। স্কুল জীবনের পর দীর্ঘ বেশ কয়েকটা বছর কাটিয়ে ফেলেছেন এভাবেই। পড়াশোনা, রেডিওয় নানা অনুষ্ঠান শোনা, চিঠিপত্র লেখা, এইভাবে চলে গোটা দিন। সঙ্গে আয় রোগজারের দিশা কৃষিকাজ। তার এই ভাবনা এবং গুণকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
advertisement
প্রতিদিনের জীবন কাটছে সাদামাটাভাবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রান্তিক গ্রামে জন্ম। ছোটবেলায় বাবার চাকরি থাকার কারণে কমবেশি স্বাচ্ছন্দ্যে কেটেছে। তবে সংসারের ভার নিজের কাঁধে আসার পর বেড়েছে দায়িত্ব। পারিবারিক জমি এবং পুকুর রক্ষণাবেক্ষণের কারণে চাকরির আবেদনও করেননি। তবে ছোট থেকেই নেশা বই, লোকসংস্কৃতিকে জানা, বোঝা। সেই হিসাবে গোটা জেলার কম বেশি নানা ইতিহাস তিনি খোঁজ করেছেন। লিখেছেন কয়েকটি বই। দীর্ঘ বেশ কয়েকবছর ধরে নিজের সম্পাদনায় সাহিত্য ও খবরের কাগজ বার করেন তিনি।
জেলার বাংলা ওড়িশা সীমানা এলাকা দাঁতন থানার জামুয়াপতি এলাকার বাসিন্দা অতনু। বরাবরই তিনি সাদামাটা জীবনে অভ্যস্ত। তেমন আড়ম্বর নেই জীবনযাত্রায়। পাঞ্জাবি-পাজামা আর কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাগ, এমনই দেখে অভ্যস্ত সকলে। তবে তাঁর গুণ চমকে দিয়েছে সকলকে। বিদ্যালয় জীবন থেকে লেখালেখি শুরু। বিদ্যালয়ের প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধ এবং কবিতা সেই ঝোঁক বাড়িয়ে তোলে। এরপর তিনি কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়গার পত্রিকায় নানা লেখা লিখেছেন। দৈনিক এক সংবাদপত্রেও তিনি নিয়মিত নানা প্রবন্ধ এবং বিষয়ের উপর লেখালেখি করতেন। শুধু তাই নয়, তিনি লোকায়ত সংস্কৃতি, ইতিহাস ক্ষেত্র, গ্রামীণ নানা রীতি নিয়ে বইও লিখেছেন। এখনও তাঁর কাছে বহু মানুষ আসেন নানা গ্রামীণ সংস্কৃতি, শিল্প এবং ইতিহাস সম্পর্কে জানতে। দিব্যি চাষাবাদ করে এভাবে সংস্কৃতি চর্চায় ডুবে অতনু। বহুবার বহু সাহিত্যিক, বিশিষ্টজনদের তিনি চিঠি লিখেছেন, পেয়েছেন চিঠির উত্তরও। তবে সাদামাটা জীবনই তাঁর যেন বেশ ভাল লাগে।
সারাদিন পড়াশোনা এবং ইতিহাস চর্চা যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার করে। এসব ভাললাগা এবং সারাদিন পড়াশোনার মধ্যেই বুঁদ হয়ে থাকেন অতনু। প্রান্তিক এক গ্রামে থেকে তাঁর এই চর্চাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলের।
রঞ্জন চন্দ