পরনে গেরুয়াবস্ত্র, মুখভরা দাড়ি পিঠে আস্ত একখানা ব্যাগ হাতে তিরঙ্গা। হাওড়ার প্রভাসের মুখে চোখে এদিন ছিল এক অন্য যুদ্ধ জয়ের বার্তা। অভিনব এই যাত্রাপথে প্রভাসের মূল বার্তা মানবজাতির কল্যাণ এবং মা গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করা।
advertisement
বছর তিরিশের প্রভাস বর পেশায় একজন দিনমজুর। দিন এনে দিন খাওয়া পরিবার। যদিও সে বেশ পারদর্শী ক্যারাটেতে। ব্ল্যাক বেল্ট অধিকারী সে। ছেলের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পায়ে হেঁটে কেদারনাথ যাত্রা পূর্ণ করবে। যদিও লকডাউন এবং সংসারের অভাব অনটনের কারণে এতদিন পেরে ওঠা যায়নি। "বাবা মুখ তুলে চেয়েছে তাই সম্ভব হতে যাচ্ছে ছেলের স্বপ্ন। ছেলের স্বপ্ন পূরণ হোক আমরা ভীষণভাবে চাই।" জানালেন প্রভাসের মা।
দীর্ঘ এই পথ একা অতিক্রম। তাঁর এই যাত্রা পথে থাকছে অনেক ঝুঁকি। এই প্রশ্নের উত্তরে প্রভাসের মা জানান, "কেদারনাথ বাবা টেনেছেন, উনিই সমস্ত কিছু দায় ও বিপদে রক্ষা করবেন।
আগামী তিন থেকে সাড়ে তিন মাস সময় গোটা পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করবে প্রভাস। অদম্য ইচ্ছা আর মনের জোরকে কাজে লাগিয়ে সাঁকরাইল গঙ্গার ঘাট থেকে এই যাত্রা শুরু করলেন প্রভাস। যা সকলকে অবাক করিয়ে দেওয়ার মতই। যেখানে এই গরমের এই দাবদাহে মানুষ নাজেহাল। মানুষ ভয় পাচ্ছেন নিদেনপক্ষে বাড়ির বাইরে বের হতে, সেখানে কী ভাবে খালি পায়ে হেঁটে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবেন এই যুবক? চোখ কপালে উঠছে এলাকাবাসীর।
আরও পড়ুন: বাম্পার সুযোগ! ৫ টাকার নোট দিলেই মিলবে ২০ লাখ টাকা! কী ভাবে? দেখে নিন 'সঠিক' নিয়ম...
স্থানীয় তপন দাস জানান, "প্রশাসন গঙ্গা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে। একজন এই ব্যক্তিগত উদ্যোগে এমন ভাবনার শরিক হওয়া সত্যিই অভাবনীয়। সাঁকরাইল বাসিন্দা শুভজ্যতি ঘোষ জানান, সরকার বিভিন্ন নিয়ম করে আইন করে গঙ্গা দূষণ রুখতে চেষ্টা করছে। অনেক সময় আমরা মানুষ হিসাবে সেগুলো পালন করি না। মানুষের মধ্যে শুভবুদ্ধি উদয় করানোর জন্য যা করছে প্রভাস তা অভাবনীয়। ও সাঁকরাইলের গর্ব। যে ভাবে প্রভাস এগিয়ে চলেছে, এর একটা পজিটিভ দিক রয়েছে। নিশ্চিত প্রভাসকে দেখে কিছু সংখ্যক হলেও মানুষ এগিয়ে আসবেন, সচেতন হবেন।
রাকেশ মাইতি