এখানেই শেষ নয়, ওই বৃদ্ধাশ্রম, মধ্যমগ্রামের দিগবেড়িয়ার নিবেদিতা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মালকিন নীপা রায় সরকারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানান বৃদ্ধা শর্মিষ্ঠা দেবী। নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েও কাজ করাচ্ছিলেন তাকে দিয়ে। পরিচারিকার কাজ করতে অস্বীকার করায় মারধর-সহ প্রাণে মারারও হুমকির মুখেও পড়তে হয়েছে বৃদ্ধাকে। দেওয়া হত অজানা ওষুধও। ছেলের কাছে ফেরার উপায় নেই, সে দরজাও বন্ধ।
advertisement
দিন কয়েক আগে বৃদ্ধাশ্রম থেকে পালিয়ে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। নীপার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বৃদ্ধাশ্রম মালিক নীপা। শর্মিষ্ঠা দেবীর শ্বশুরবাড়ি দার্জিলিংয়ে। স্বামী অশেষ মুস্তাফি সেখানে হোটেলের ব্যবসা করতেন। কয়েক বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পরে পাকাপাকিভাবে কলকাতার বাড়িতেই চলে এসেছিলেন শর্মিষ্ঠা। একমাত্র ছেলের কাছেই থাকছিলেন। ২০২১ এ বাড়ি ছাড়তে হয় তাঁকে। মাসিক ৬ হাজার টাকায় বৃদ্ধা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসেন একমাত্র ছেলে। একবছর ধরে প্রতি মাসে বৃদ্ধাশ্রমে টাকা পাঠালেও, পরের বছরে শর্মিষ্ঠা দেবীর ছেলে এককালীন ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে আসেন বৃদ্ধাশ্রমে। জানিয়ে আসেন, আমৃত্যু মায়ের থাকা খাওয়া ওষুধ ও চিকিৎসার জন্য এই টাকা দিয়ে গেলেন। আর কোনও টাকা তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।
শর্মিষ্ঠা মোস্তাফির অভিযোগ, ওই টাকা পাওয়ার পর থেকেই তাঁকে দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে রান্না থেকে বাসন মাজা-সহ সমস্ত কাজ করাতে শুরু করেন নীপা। এমনকী নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েও শর্মিষ্ঠাকে দিয়ে কাজ করাতেন বলে অভিযোগ। এই মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে, পালিয়ে আসেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই এখন মুখ্যমন্ত্রী, জেলা পুলিশ-সহ মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ বৃদ্ধা।
Rudra Narayan Roy