কিন্তু যে নলেন গুড় আমরা ভালবেসে খাই, তা কতটা খাঁটি ও নিরাপদ সেটা হয়ত অনেকেই জানেন না। কারণ, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রথাগত পদ্ধতিতেই আজ বদল এসেছে। মাটির হাঁড়ির বদলে দুর্গাপুরে আসা বহু ‘শিউলি’রা এখন ব্যবহার করছেন প্লাস্টিকের কলসি। আর সেখানেই সমস্যার শুরু ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , আগে যেখানে খেজুর রস তুলতে মাটির হাঁড়ি ব্যবহার করা হত, সেটিকে প্রতিদিন ধুয়ে আবার আগুনে পুড়িয়ে জীবাণুমুক্ত করা হত। প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং পরিশ্রমসাধ্য হওয়ায় অনেকেই এখন সহজপথ অবলম্বন করে প্লাস্টিকের কলসির শরণাপন্ন হচ্ছেন। প্লাস্টিকের পাত্র হালকা, ধোয়া সহজ এবং দামও তুলনামূলকভাবে কম।ভেঙে যাওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। তাই ক্রমশ মাটির হাঁড়িকে সরিয়ে তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক।
advertisement
‘শিউলিদের’ দাবি—প্লাস্টিক ব্যবহারেও নলেন গুড়ের স্বাদ নষ্ট হয় না। তবে স্থানীয়রা এই বিষয়ে একেবারেই একমত নন। তাঁদের মতে, প্লাস্টিকের কলসিতে রসের স্বাদ বদলে যায়, নলেন গুড়ের খাঁটি সুবাসও হারিয়ে যায়। শুধু স্বাদ নয়, শরীরের উপর পড়ছে ভয়ঙ্কর প্রভাব।চিকিৎসকরাও সতর্ক করছেন।তাঁদের দাবি প্লাস্টিকের কলসি একেবারেই নিরাপদ নয়। শীতকালে রাতে খেজুর রস সংগ্রহের সময় তাপমাত্রার পরিবর্তন ও রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নিম্নমানের প্লাস্টিকে থাকা ক্ষতিকর যৌগ খাবারে মিশে যেতে পারে। এর ফলে রস বা গুড়ের মান যেমন নষ্ট হয়, তেমনই দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারসহ একাধিক রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
সব মিলিয়ে, সুবিধার জন্য প্রথাগত পদ্ধতি বাদ দিয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি ও নলেন গুড়ের খাঁটি স্বাদ হারানোর উদ্বেগ। নলেন গুড়ের ‘স্বাদ’ অব্যাহত রাখতে হলে মাটির হাঁড়িতে ফেরার আহ্বান খাদ্যরসিকদের বড় অংশের।





