প্রতিবছর শীত পড়া শুরু হলেই খেজুরি ২ ব্লকের দক্ষিণ মালদা , রামচক, জনকা, পিরিজপুর, কার্তিকখালি, মেদাখালি, বারাতলা, ঝুটিয়াহারি প্রভৃতি গ্রামগুলি থেকে ঘর সংসার নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কয়েক হাজার মানুষ। পৌঁছে যান পূর্ব মেদিনীপুর- সহ হাওড়া, হুগলি, দুই চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন গ্রামে। বিশেষ করে খেজুর গাছ আধিক্য এলাকাগুলিতে। শীতকাল মানেই বাঙালি ঘরে নলেন গুড়ের রমরমা। তাই গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে এর কদর বেশি। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ফ্রেব্রুয়ারি দেড় – দু’ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে গুড়ের কারবার।
advertisement
প্রতি শীত মরশুমের তিনমাস খেজুরির গ্রামগুলিতে থেকে পরিবার সমেত বেরিয়ে পড়েন। সারা বছর অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এই তিনমাস বাড়তি রোজগারের আশায় অধিকাংশ বাড়ির পুরুষ সদস্যের পাশাপাশি মহিলারাও শামিল থাকেন গুড় তৈরিতে। কাঁথি থেকে দিঘা যাওয়ার ১১৬ বি জাতীয় সড়কের ধারে ফি বছরের মতো এ বারও ৬০-৭০ টি গুড়শাল তৈরি হয়েছে। তাঁবুর মতো খেজুর গাছের পাতা, ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী আস্তানা পেতেছেন শিউলিরা। মালিকের সঙ্গে চুক্তি প্রক্রিয়া মিটিয়ে গাছ কাটার কাজ শুরু হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও রস সংগ্ৰহ এবং গুড় তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন : চর্ব্য চোষ্য খেয়ে ‘এতে’ই হাত মুছতেন মুঘল সম্রাটরা! এখন ‘এটা’-ই আমরা একগাদা টাকা দিয়ে কিনে খাই
শেষ বছর ধরে গুড়শাল তৈরি করে আসছেন দক্ষিণ মালদার বাসিন্দা গৌরহরি মণ্ডল। এবার ১২০ টি গাছ লিজে নিয়েছেন তিনি। গৌরহরি বলেন, ‘গুড় তৈরির কাজ সবাই জানে না। আমাদের আশেপাশের গ্রামের মানুষজনের মধ্যে এই শিক্ষা সীমাবদ্ধ। এই কাজে পরিশ্রম থাকলেও বাড়তি আয় থাকে। পরিবারের লোকজন মিলে কাজ করলে লাভ বেশি হয়। তাই পরিবার নিয়ে সবাই বেরিয়ে পড়ে শীত পড়লেই।’ ৩ মাসের কারবারে সব খরচের পরও লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত লাভ তুলতে সক্ষম হন গৌরহরির মত খেজুরির গুড় কারবারিরা।