শীতকাল মানেই উৎসবের আমেজ,আর এই আমেজের একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে পিকনিক, মেলা। কিন্তু ‘দিন আনি দিন খাওয়া’ মানুষদের অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও সাধ্য হয়ে ওঠে না তাই জীবন কখনও কখনও হয়ে ওঠে একঘেয়েমি। শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল বা রোদ ঝলমলে দুপুরে স্থানীয় মানুষদের দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি দূর করতে বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নিল এক অভিনব উদ্যোগ।
advertisement
আরও পড়ুন: বুধবার খালেদা জিয়ার শেষকৃত্যে যোগ দেবেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
দামোদরের তীরবর্তী বিদ্যাসাগর প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় এক বাৎসরিক মিলন মেলা বা ‘দামোদর মেলা’-র। এই উৎসবে সামিল হন প্রায় ৯০০ প্রান্তিক দুঃস্থ মানুষ সহ স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা। মেলায় নজরকাড়ে মৃৎশিল্পের স্টল, দামোদরের বিভিন্ন মাছের স্টল, শীতের পোশাকের সম্ভার, বাউল গান ও লোকসঙ্গীত। এমনকি দামোদর মেলায় আসা প্রায় ৯০০ দুঃস্থ মানুষের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয় এদিন। আর এই উৎসবের বড়ো আর্কষণ ছিল ‘আমাদের শপিং মল’। যেখান থেকে মেলায় আগত প্রান্তিক মানুষেরা বিনামূল্যে নিয়ে যেতে পারবেন নিজেদের পছন্দমত পোশাক। উৎসব প্রাঙ্গণ থেকে ‘দুঃখের নদ’ দামোদরকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর ও দামোদর ভিত্তিক জীবিকাকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়।
এই বিষয়ে সংস্থার সম্পাদক প্রলয় মজুমদার বলেন, “পূর্ব বর্ধমান মূলত কৃষিপ্রধান জেলা। কৃষিকাজে বেশির ভাগটাই দামোদরের জলের ওপর নির্ভর আর এই জলই দূষিত হচ্ছে। আজ আমাদের উৎসব থেকে দামোদরের জেলেদের উজ্জীবিত করতে দামোদরের মাছ নেওয়া হয়।আগে প্রায় ১৩ রকমের মাছ পাওয়া যেত কিন্তু এখনতা ৩ রকমের ঠেকেছে। দূষণের হাত থেকে দামোদরকে রক্ষা করতে হবে তাই এই উৎসব থেকে দামোদর বাচানোর ডাক দেওয়া হয়”।
এই মেলা কেবল আনন্দ-উৎসব নয়, সামাজিক অঙ্গীকারের মঞ্চও। এই উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন হাসি ফুটল প্রান্তিক মানুষের মুখে , অন্যদিকে দামোদরের বিপন্ন অস্তিত্ব নিয়ে জনমানসে তৈরি হল সচেতনতা। তাই এই মেলার মধ্যে দিয়ে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করলে বর্ধমানের এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।