প্রায়সই হস্তচালিত তাঁতের বাজার সম্পর্কে গেল গেল রব ওঠে। কিন্তু একসময় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁতের খটখটানি আওয়াজকেই গর্ববোধ করত আপামর শান্তিপুরবাসী। যা আজও তরুন প্রজন্মের মুখে মুখে শোনা যায়। তবে সেই সময়কার গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা করণীয় তা হয়তো অনেকেই করেন না। বাজার খারাপ হওয়ার কারণে যে যার মত হস্তচালিত শিল্পীরা পেট চালানোর জন্য ভিন্ন পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন।। ফলে হস্ত চালিত তাঁত শিল্প তলানিতে থেকেছে অন্যদিকে আধুনিক প্রযুক্তির ফলে বিভিন্ন পাওয়ারলুম জ্যাকার্ড মেশিন এবং অত্যাধুনিক রেপিয়ার মেশিনে বোনা অল্প পয়সায় কম সময় শাড়ি তৈরির প্রবণতা বেড়েই চলেছিল তবে পুনরায় হস্তচালিত তাঁতের সংস্থা উদ্বোধন হওয়াতে কিছুটা হলেও ধীরে ধীরে হস্ত চালিত তাঁত পুনরুজ্জীবিত হবে বলেই মনে করছেন বিভিন্ন তাঁতিরা।
advertisement
আরও পড়ুন: মাটিই যখন দেবতা! স্নান সেরে বসুন্ধরার মাটির ঢেলা মাথায় বয়ে নিয়ে পুজো দেন ভক্তরা
কলকাতার উইভার্স সার্ভিস সেন্টারের ডিজাইন এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টার বিশু মন্ডল জানান, এখনও বেশ কিছু মানুষ যদিও সেই অংশটা অনেকটাই কম তবে তারা সম্পূর্ণ হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি ডিমান্ড করে থাকেন তাই তাদের জন্যেও হস্ত চালিত তাঁতের একটি বড় ব্যবসা চলে। তাঁতের শাড়ির মধ্যে বিভিন্ন আধুনিক নকশা করতে পারলে সেই ব্যবসা আরও ত্বরান্বিত হবে, তবে সেক্ষেত্রে তাঁতিদের শিল্প নৈপূন্যতার প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজনীয়। যদি আধুনিক বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি গুলি ঠিক ঠিক ব্যবহার করা যায় তাহলেও হস্ত চালিত তাঁতের বাজার আবারও উঠবে। কিন্তু কোনও কারণে সেই সমন্বয়ের অভাব হচ্ছে। সেই কারণেই রাজ্য সরকার উদ্বিগ্ন এবং চিন্তিত। তবে এখনও শান্তিপুরের বেশ কিছু যুবকেরা রয়েছেন যারা এই হস্ত চালিত তাঁতকে বাঁচানোর জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন“
স্থানীয় মহিলারা জানাচ্ছেন, আমরা এতদিন কোনও সুযোগ পেতাম না, পরিবারে লোকেরা কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করছে কেউ ভিন্ন কাজ করছে কিংবা অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছে পেট চালানোর জন্য। কিন্তু আবারও যে পাড়ার মধ্যে তাঁতের কারখানা হয়েছে তা সত্যিই খুব গর্বের। আমরা নতুন করে যারা ভাবছিলাম ভিন্ন পেশায় কিছু করতে হবে তাদের বেশ খানিকটা সুবিধা হয়েছে। সংসারের কাজের পরে অনায়াসে তাঁত বুনে যদি দিন প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকাও রোজগার করা যায় তাহলে বাড়ির কর্তার পাশে আমরাও দাঁড়াতে পারি। পাড়ায় পাড়ায় আবারও এমন তাঁত-কারখানা গজিয়ে উঠুক এটাই আমরা চাইছি।
Mainak Debnath