দীপক কুমার দাস (Dipak Kumar Das) নিজের গ্রামে একটা ব্যাঙ্ক গড়তে চেয়ে বিস্তর চিঠি-দরবার করে বারবার ব্যর্থই হচ্ছিলেন। অবশেষে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi) একটি চিঠি লিখে নারায়ণগড় গ্রামে একটি ব্যাঙ্ক তৈরির আর্জি জানান দীপক। গত ৭৫ বছর ধরে, নারায়ণগড়ের বাসিন্দাদের ব্যাঙ্কের পরিষেবা পেতে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিতে হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন- "স্কুল বন্ধ রেখে বেশি বিপদ ডেকে আনছেন" সরকারকে স্কুল খোলার আর্জি জানাল UNICEF
কুমারপুর গ্রামের বাসিন্দা দীপক গত এক বছর ধরে এই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। পেশায় চা বিক্রির পাশাপাশি দীপক গ্রামবাসীদের নানা ধরনের ফর্ম পূরণ করতে এবং সরকারি নানান প্রকল্প পাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্র লিখে সাহায্যও করেন। একেবারে গোড়ার দিকে তিনি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (SBI) মূল ম্যানেজারকে একটি চিঠি লিখেছিলেন, বলা বাহুল্য জবাব আসেনি।
আরও পড়ুন- চাপের মুখে পড়ে কিটক্যাটের মোড়ক থেকে জগন্নাথ দেবের ছবি সরাল নেসলে ইন্ডিয়া
তারপর গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় কুশড়া ক্লাবের তরফে তিনি নিজেদের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি ব্যাঙ্ক চেয়ে সমস্ত গ্রামবাসীদের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি পাঠান প্রধানমন্ত্রীকে। আশার খবর, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তার চিঠিটির কেবল প্রাপ্তিস্বীকারই করেনি এসবিআইকে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করতেও নির্দেশ দিয়েছে।
গ্রামে একটা ব্যাঙ্ক তৈরি হলে আদিবাসীরা সহজেই সমস্ত সরকারচালিত প্রকল্পগুলির সুবিধা পাবে এবং সেই টাকা সরাসরি তাদের নিজেদের অ্যাকাউন্টেও পাঠানো যাবে।
কয়েক মাস পরে, এসবিআইয়ের জেনারেল ম্যানেজার দীপককে মেল করে জানিয়েছিলেন যে তারা ওই এলাকায় নতুন ব্যাঙ্ক তৈরি করতে পারবেন না। তবে একটি গ্রাহক কেন্দ্র তৈরির প্রতিশ্রুতি মেলে। “সরকারের বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে যেগুলি সম্পর্কে মানুষজন জানেও না। আমি তাদের সাহায্য করার সময় বুঝতে পেরেছিলাম যে এই এলাকায় ব্যাঙ্কের অভাব বিশাল বড়ো সমস্যা। তাই আমি এলডিএমকে চিঠি লিখেছিলাম, কিন্তু কিছুই হয়নি। তারপর আমি সোজা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখি এবং উত্তরে এসবিআই থেকে একটি চিঠিও পেয়েছি। তারা লিখেছেন যে ব্যাঙ্কের শাখা খুলতে পারবেন না ঠিকই তবে আমাদের গ্রামে একটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খুলবেন। আমি এই প্রতিক্রিয়াতে অবশ্য খুশি নই। তাই, আমি অর্থ মন্ত্রকের কাছেও চিঠি লিখেছি, এবং আশা করি বিষয়টি নজরে আসবে,” News 18-কে বলেন দীপক।
দীপকের অনুরোধের ফলাফল হিসেবেই, SBI প্রথমে একটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র চালু করবে নারায়ণগড়ে এবং পরে একটি ব্যাঙ্কও গড়ে তুলবে বলে জানা গিয়েছে। গ্রামের বাসিন্দারা এই উদ্যোগের সমস্ত কৃতিত্বই দিয়েছেন চা ওয়ালা দীপককেই। পায়ে হেঁটে হেঁটে দূর শহরের ব্যাঙ্কে যাওয়ার দিন শেষ। “আমাদের পেনশন পেতে ২০ কিলোমিটার যেতে হয়েছিল, আমরা এই উদ্যোগের জন্য দীপককে মন থেকে ভালোবাসা আর ধন্যবাদ জানাই,” বলছেন গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব গ্রামবাসী গোয়া ভোক্তা৷
