এরপর বেশ কয়েক বছর টালবাহানার পরে বছর দুয়েক আগে আবারও নতুন করে ব্রডগেজ লাইন পাতা হয় কৃষ্ণনগর থেকে আম ঘাটা পর্যন্ত। আম ঘাটা স্টেশনটিকে পুনরায় সংস্কার করা হয়। সেবারও ঘটা করে ব্রডগেজ লাইন পেতে খালি ট্রেন এনে করা হয় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষাও। আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, খুব শীঘ্রই এই রেল পরিষেবা চালু হবে। তবে সে গুড়ে বালি, আজও সেই রেলপথ দিয়ে গড়াইনি রেলের চাকা। এর পরেই নবদ্বীপ রেলস্টেশন বাঁচাও নামের একটি কমিটি গঠন করা হয়, তাদের দাবি আমঘাটা নয়, পুরনো নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্তই চালু করতে হবে রেল পরিষেবা। একাধিক আন্দোলন মিছিল ও বিভিন্ন সরকারি দফতরে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার পর অবশেষে নড়েচড়ে বসল রেল।
advertisement
আরও পড়ুন: রাতে বালিশ নিয়ে যা করতেন এই মহিলা! দেখতে পেতেই পুলিশেরও চোখ কপালে, কী মিলল জানেন? চমকে উঠবেন শুনে
এ বিষয়ে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “দীর্ঘদিনের সংগ্রাম নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত রেল লাইন পৌঁছানোর দাবিতে বহুবার আন্দোলন করা হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কথা দিয়েছেন, নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত রেললাইন তিনি করে দেবেন। এটা আমার জীবনের একটা বড় আশ্বাস, আর এটা কয়েক মাসের মধ্যেই বাস্তবায়িত হওয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন স্বয়ং রেলমন্ত্রী। অপেক্ষায় রইলাম রাজ্য সরকারের সহযোগিতার। রেলের জায়গা দখলদারি মুক্ত করার ন্যূনতম কাজটি যদি করে দেন, তাহলে অতি দ্রুত নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত রেললাইন চালু হয়ে যাবে।”
এ বিষয়ে নবদ্বীপ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি কল্লোল কর জানান, “এই সংগ্রাম এখানকার সাধারণ মানুষেরা করেছে, ১০০ বছরের পুরনো এই রেলপথ তুলে দেওয়া যাবে না। এটি একটি আন্তর্জাতিক জায়গা, সাধারণ মানুষের রুজি রোজগারের প্রশ্ন। এটা দীর্ঘদিনের দাবি সকল সাধারণ মানুষের। এমনকি একটি সংগ্রামী মঞ্চ পর্যন্ত রয়েছে যেখান থেকে আমরা সকলে মিলে লড়াইটা করি। সংগ্রামটা ওঁর নয়, সংগ্রামটা আমাদের, আমাদের এলাকার সমস্ত মানুষের। আমরা পরিষ্কার তথ্য চাই ওনার কাছে সেই পত্র প্রকাশ করুন, যে নবদ্বীপ ঘাট স্টেশন মানে কোনটিকে বোঝানো হচ্ছে। আগে যেই নবদ্বীপ ঘাট স্টেশন ছিল সেই স্টেশনকেই বোঝাচ্ছেন নাকি তারা যে সম্প্রতি নতুন ম্যাপ তৈরি করেছে আমঘাটা থেকে অনেকটা দূর দিয়ে নবদ্বীপ ধাম সংলগ্ন যে কালিনগরে গিয়ে রেললাইনকে যুক্ত করার সেটি বোঝাচ্ছেন? আমরা চাই ১০০ বছর আগে নবদ্বীপ ঘাটে যেখানে রেলস্টেশন ছিল সেখানেই যাতে রেলের পরিষেবা শুরু হয়”।
নবদ্বীপ ঘাট রেলস্টেশন বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সুদীপ দেবনাথ জানান, “আমাদের এই রেল নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। এই রেলপথটা সম্পূর্ণ করার স্বীকৃতি পেলেও বেশ কিছু কাজ এগোনোর পরেও আমরা দেখলাম যে আমাদের রেল টা হল না। সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা রেল বাঁচাও কমিটি দীর্ঘ এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে লড়াই সংগ্রাম এমনকি আমরা বিভিন্ন প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও আমরা গিয়েছি আমাদের দাবি নিয়ে। এলাকার মানুষের এই যে দাবি সেটি আমরা লিখিত আকারে পেশ করেছি। অধিকারের দাবিতে যে লড়াই আমাদের চলছে সেটা ততদিন পর্যন্ত জারি থাকবে যতদিন না এই রেল আমাদের নবদ্বীপ ঘাট স্টেশন পর্যন্ত আসছে।”
এ বিষয়ে সাধারণ মানুষেরাও জানান তাদের দীর্ঘদিনের এই দাবি। সামনেই মায়াপুর একটি আন্তর্জাতিক জায়গা অনেকেই রুজি রোজগার করে খান। রেল পথ চালু হলে কৃষ্ণনগর তথা কলকাতার সঙ্গে যাতায়াত আরো অনেক সুবিধা হবে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।
—- Mainak Debnath