জানা যায়, মহাপ্রভু ও নিত্যানন্দ প্রভুর বিগ্রহের মধ্যে বিস্ময়কর সাদৃশ্য রয়েছে। শ্রীমুখ থেকে দেহভাব দু’জনকে আলাদা করে বোঝা কঠিন। একমাত্র অবস্থানই তাদের পরিচয় দেয় নিতাইচাঁদকে সর্বদা মহাপ্রভুর ডানদিকে স্থাপন করা হয়। পঞ্চতত্ত্বের মূর্তিতেও একই নিয়ম অনুসৃত হয়।
advertisement
নবদ্বীপে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর মন্দির Photo- Collected
ধামেশ্বর মহাপ্রভু মন্দিরের সভাপতি সুধীন গোস্বামী জানান, “নিত্যানন্দ প্রভু এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নবদ্বীপের দুই মহান প্রাণপুরুষ। শাস্ত্রমতে যিনি বলদেব, তিনিই কলিযুগে নিত্যানন্দ রূপে অবতীর্ণ হন। আর যিনি শ্রীকৃষ্ণ, তিনিই শ্রীচৈতন্য রূপে আবির্ভূত হন। নিত্যানন্দ প্রভু বলদেবেরই অভিন্ন রূপ।” তিনি আরও বলেন, “কলিযুগে নিতাই ও গৌর দুই দেহ ধারণ করলেও তারা মূলত এক। রাম-লক্ষণ বা কৃষ্ণ-বলরামের মতই নবদ্বীপ লীলায় নিতাই-গৌর অভিন্ন সত্তা হিসেবে লীলা করেছেন।”
ইতিহাস অনুসারে নিত্যানন্দ প্রভুর জন্ম বীরভূমের একচক্রপুরে, পিতার নাম হারাই পণ্ডিত। অন্যদিকে মহাপ্রভুর জন্ম এই নবদ্বীপেই। কিন্তু চৈতন্যদেব নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে নিতাইচাঁদ তাঁর ‘বড় দাদা’। সুধীনবাবুর কথায়, “মহাপ্রভুর অন্তর্ধান-পরবর্তী সময়ে নবদ্বীপসহ সমগ্র বৈষ্ণব সমাজকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিতাইচাঁদের ভূমিকা অপরিসীম। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী মা জাহ্নবাদেবীও সমাজকে পথ দেখিয়েছিলেন।”
মন্দির কর্তৃপক্ষের মতে, ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা ও ভক্তির সমন্বয়ে নবদ্বীপ আজও এক অনন্য তীর্থক্ষেত্র। নিতাই গৌর লীলাস্থান হিসেবে এই অঞ্চল শুধু ভক্তদেরই নয়, গবেষকদের কাছেও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
Mainak Debnath





