মূলত আমরা যে কোনও ছোট কিংবা বড় রোগ ব্যাধি হলে ছুটে যাই ডাক্তারের কাছে, কিন্তু এই গ্রামের চিন্তাধারা একদম অন্য ধরনের। কোনও বড় ডাক্তার কিংবা বদ্যি নয়, শরীরে ব্যথা হলে তাঁদের একমাত্র ভরসা ধর্মরাজ মন্দির। এই নিয়ে বেলিয়া গ্রামের মানুষের একটা প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে। ধর্মরাজ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে সেখানে পর পর কিছু নিয়ম রয়েছে। সে সব নিয়ম মেনে চললেই এক ঝটকায় বাতের ব্যথা থেকে শুরু করে শরীরের সমস্ত রোগব্যাধি দূর হয়ে যায় বলে মানুষ বিশ্বাস করেন।
advertisement
এই মন্দিরে সারা বছরই হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লাল মাটির শহর এই বীরভূম। আর এই বীরভূমের আহমেদপুর রেল স্টেশন থেকে প্রায় কিলোমিটার ৪ দূরে বেলিয়া গ্রামেই রয়েছে ধর্মরাজ মন্দির। ভক্তদের মুখে মুখে এই মন্দিরের নাম এখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই মন্দিরের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন। তাই বীরভূম তো বটেই, সেই সঙ্গে ভিনজেলা, এমনকি, অন্যান্য রাজ্য থেকেও রোগীরা এসে এখানে ভিড় করেন বলে দাবি সেখানকার সেবায়েতদের। তাঁরা জানিয়েছেন, ৪০০ বছরের পুরানো এই মন্দিরে আষাঢ় মাসের প্রত্যেক রবিবার দিনগুলিতে প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ রোগী ও ভক্তদের সমাগম হয়।
তবে আদতে কী সত্যি করেই এই জলে স্নান করলে কমে রোগ ব্যাধি! এই বিষয়ে বীরভূমের রামপুরহাটের এক বিশিষ্ট ডাক্তার আশিষ রায় জানান, “ভক্তরা অবশ্যই এই মন্দিরে এসে স্নান করে মাটি মেখে পুজো দিতেই পারেন, কিন্তু এর সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোনও সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে একটি ছোট্ট পুকুরে এত মানুষ স্নান করছেন সেই জলে আবার স্নান করলে রোগব্যাধি কমে যাবার থেকে বাড়তে পারে বেশি, কারণ সেই জলে বিভিন্ন মানুষের শারীরিক জীবাণু যুক্ত হচ্ছে”। সেই কারণে অবশ্যই নিজেদের চিন্তাধারা মুক্ত রেখে এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর মাহাত্ম্য দিয়ে স্নান করা উচিত।
সৌভিক রায়