জানা গিয়েছে, শ্রাবণ মাসকে বলা হয় দেবাদিদেব মহাদেবের মাস। অতি পবিত্র এই মাসে মনোস্কামনা পূরণ করবার লক্ষ্যে দূরদূরান্ত থেকে শিব ভক্তরা শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য শৈব তীর্থের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্তেও দেখা গেল এক চিত্র। জেলার রঘুনাথগঞ্জ থেকে বহরমপুর, গঙ্গায় স্নান করে শিবের মাথায় জল ঢালতে বাঁকে করে জল নিয়ে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন শিব মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন ভক্তরা। পার্শ্ববর্তী জেলা বীরভূমের প্রসিদ্ধ শিব মন্দির কলেশ্বর ও কান্দির রুদ্রদেব মন্দির, বা কান্দির প্রাচীন বাঘডাঙ্গা পঞ্চমুখী শিব মন্দির সহ তৎসংলগ্ন বিভিন্ন শিব মন্দিরে জল ঢালার উদ্দেশ্যে শিব ভক্তরা পায়ে হেঁটে গঙ্গা থেকে জল নিয়ে আসছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে চালু নতুন পোর্টাল! সুবিধা পাবেন বাসিন্দারা, নিরাপত্তা বাড়ল কয়েকগুণ, জানুন
বেশ কয়েক বছর হল শ্রাবণের জলযাত্রায় পথে হনুমানের মূর্তি, বজরংবলী, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ, শিব, দুর্গা, গনেশ দেখা যায়। যা এক কার্নিভালে রূপ নিয়েছে বর্তমানে। গেরুয়া পোশাকে শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার চল দীর্ঘ কালের। শ্রাবণের প্রতি সোমবার, বিশেষ করে শেষ সোমবার মুর্শিদাবাদ জেলার শিবনিবাসে ভক্তেরা ভিড় জমায়। টানা লম্বা রাস্তা ধরে বহু ভক্তরা শিবমন্ত্র জপ করতে করতে শিবনিবাসের উদ্দেশে রওনা দেন। সকলের কাঁধে বাঁক তাতে বাঁধা কলসি। কেউ যাচ্ছেন শিব মন্ত্র জপ করে, আবার অনেকে দল বেঁধে মাইক বাজিয়ে চলেছেন। রাস্তার মাঝে এই সকল ভক্তদের লুচি ও মিষ্টি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রবিবার বিকেল থেকে শিব ভক্তদের খাওয়ানোর জন্য লুচি ও মিষ্টির ব্যবস্থা করেছিলেন সংগঠনগুলি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় লক্ষাধিক ভক্তকে লুচি মিষ্টি খাওয়ানো হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। সারারাত পায়ে হেঁটে সোমবার ভোরে মন্দিরে পৌঁছে দেবাদিদেব মহাদেবের মাথায় জল ঢাললেন এইসব ভক্তরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ভক্তদের মধ্যে বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ যেমন আছেন, তেমনই আছেন মহিলারাও। সবারই আশা পুণ্য অর্জন। তাই শত কষ্ট সহ্য করে পায়ে হেঁটে শিব মন্দিরে উপস্থিত হন। মন্দির প্রাঙ্গণ জুড়ে মেলার আসর বসেছে। নানা রকম খেলনার সরঞ্জাম থেকে শুরু করে নাগরদোলা কিছুই বাদ নেই। আপাতত এই পুণ্য অর্জন আর মেলাতেই মেতে উঠেছে মুর্শিদাবাদ জেলাবাসী।