প্রচন্ড রোদে বা ভয়ঙ্কর গরমে মাটির বাড়ি অন্য রকমের একটা শান্তি দেয়। ঘরের ভিতর থাকে ঠান্ডা। তবুও কেন মাটির বাড়ি ব্যবহার করেন না কেউ? তবুও কেন প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যেতে বসেছে মাটির দোতলা বাড়ি? বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে একটা সময় শয়ে শয়ে মাটির দোতলা বাড়ি দেখা যেত, সেখানে এখন সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে হাতেগোনা।
advertisement
আরও পড়ুন: এয়ার ইন্ডিয়ার পর এবার ইন্ডিগো, টেক অফের পরই বিপত্তি! শ্বাস আটকে গেল ১৭২ যাত্রীর, তারপর…
এখন জীবন বড় দ্রুতগতির হয়ে গিয়েছে৷ তার মধ্যেও মাঝেমধ্যে পুরনো জিনিস দেখার ইচ্ছা হয়৷ আপনারও যদি মন উৎসুক হয়ে ওঠে, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভার লায়েকবাঁধ গ্রাম৷ সেখানে এখন রয়েছে একটি মাটির দোতলা বাড়ি। মালিক থাকেন না, একাকী সেটি পড়ে রয়েছে পরিচর্যার অভাবে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, মাটির বাড়ির সুবিধা কী কী? উত্তর দিয়েছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অসীম গোস্বামী৷ জানিয়েছেন, মাটির বাড়ি থারমালি ইনসুলেটেড, অর্থাৎ মাটি তাপ পরিবহন করতে পারে না। বাইরে তাপমাত্রা যদি ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে তাহলে মাটির বাড়ির ভিতরের তাপমাত্রা প্রায় দশ ডিগ্রি কমতে পারে। বাঁকুড়ার মতো যেসব জায়গায় ভয়ঙ্কর গরম পড়ে, তাপ প্রবাহ চলে, সেখানে গ্রীষ্মকালে মাটির বাড়ি যথেষ্ট আরামদায়ক বলেই মনে করছেন প্রফেসর।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর! আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার পরেই হোস্টেল থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাফ ছাত্রদের, দেখুন ভিডিও…
তবে কেন দেখা যাচ্ছে না মাটির দোতলা বাড়ি? কেন হারিয়ে যাচ্ছে এত দ্রুত! প্রফেসর এর কারণ হিসাহে জানিয়েছেন, মাটির বাড়ির কয়েকটি গঠনগত ত্রুটি। তাঁর মতে, মাটির দেয়াল যত পুরুই হোক না কেন বৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক কারণে সেই দেওয়াল খুব তাড়াতাড়ি পাতলা হয়ে যায়। মাটির বাইন্ডিং ক্ষমতা অর্থাৎ ধরে রাখার ক্ষমতা অনেকটাই কম, সেই কারণে দেওয়াল পড়ে যেতে পারে। সেই কারণেই বর্ষায় দেখা যায় একাধিক দুর্ঘটনা।
সুবিধা একাধিক, বাঁকুড়ার গরমে বসবাসের জন্য সবথেকে ভাল অপশন৷ কিন্তু বর্ষার প্রবল বৃষ্টিতে নিরাপত্তা কোথায়? সেই কারণেই ধীরে ধীরে মানুষের মন মাটির বাড়ি থেকে ঘুরে পাকা বাড়িতে আকৃষ্ট হয়েছে। তবুও মাটির দোতলা বাড়ি আজও কিছু জায়গায় চোখে পড়ে। আসলে ইতিহাস কখনও পাকাপাকি মুছে যায় না, ছাপ রেখে যায়৷
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী