সূত্রের খবর, সুতির গাইঘাটার বাসিন্দা পিঙ্কি খাতুন রান্না করার সময় ঘরের টাল-মাজার ছাদ ভেঙে পড়ে গুরুতর চোট পান। আঘাতের জেরে মাঝখান থেকে স্পাইনাল কর্ড ছিঁড়ে যায়। মুহূর্তে হাঁটাচলা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অর্থপেডিক বিভাগে ভর্তি করা হলে ডাঃ অমরেন্দ্র নাথ রায় দ্রুত অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। তবে রোগী সাড়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় পরিবার চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে, কারণ এই অবস্থায় স্পাইনাল সার্জারি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
advertisement
পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা! ঘরের ছাদ ধসে মেরুদণ্ড ভেঙে জীবন-মরণ লড়াই! তারপর? মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের অসাধ্য সাধন (Representative Image)
ঝুঁকি থাকলেও রোগীর চিকিৎসায় দেরি না করে মেডিক্যাল কলেজেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, কোনও অন্তঃসত্ত্বা রোগীর স্পাইনাল অপারেশন জেলা তো বটেই, মেডিক্যাল কলেজ স্তরে এটাই প্রথমবার। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অ্যানাসথেসিয়া দেওয়ার ঝুঁকি এবং অপারেশনের সময় সি-আর্ম গাইডেড এক্স-রে ব্যবহার করা না পারা। সাধারণত এই ধরনের অস্ত্রোপচারে সি-আর্ম অপরিহার্য, কিন্তু রেডিয়েশনে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতির আশঙ্কায় তা ব্যবহার করা হয়নি।
অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে চলে অপারেশন। চিকিৎসকদের মতে, মা ও গর্ভস্থ দুই প্রাণকেই নিরাপদে রাখা ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ। শেষ পর্যন্ত ডাঃ রায়ের নেতৃত্বে টিমের প্রচেষ্টায় অস্ত্রোপচার সফল হয়। বর্তমানে পিঙ্কি খাতুন ও তাঁর গর্ভস্থ সন্তান দু’জনেই সুস্থ এবং মেডিক্যাল কলেজে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এমন জটিল অস্ত্রোপচার সম্ভব হওয়ায় স্বস্তিতে রোগীর পরিবার। ডাঃ অমরেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে এখন এই ধরনের উন্নত এবং ঝুঁকিপূর্ণ সার্জারি করার মতো পরিকাঠামো ও যন্ত্রপাতি রয়েছে। রোগী বর্তমানে সম্পূর্ণ স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন তিনি।
