আজ যেখানে গড়ে উঠেছে দুর্গাপুরের অভিজাত এলাকা অম্বুজা নগরী, একসময় সেখানেই ছিল ডাকাত সর্দার ভবানী পাঠকের গোপন ঘাঁটি।শহরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার আজও ইতিহাসের গন্ধে ম’ ম’ করছে। এই কালীমন্দিরের পাশেই রয়েছে বেলে পাথরের তৈরি একটি বিশাল সুড়ঙ্গ।একসময় বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল ভবানী পাঠকের এই মন্দিরে। প্রাচীন চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী পুজো হয়ে আসছে ভবানী পাঠকের মন্দিরে।কালীপুজোয় মহা ধূমধামের সঙ্গে পুজো হয় এই মন্দিরে। হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়।
advertisement
তবে দীপান্বিতা অমাবস্যায় নয়। এই মন্দিরে কালীপুজো হয় ঠিক তার আগের রাতে অর্থাৎ ভূতচতুর্দশীর রাতে।প্রাচীনত্বের নিরিখে বাংলার অনেক প্রসিদ্ধ মন্দিরকে টেক্কা দিতে পারে এই মন্দির।বঙ্কিমচন্দ্রের দেবী চৌধুরানী উপন্যাসে যে সন্ন্যাসী ডাকাতের উল্লেখ মেলে, সেই ভবানী পাঠকই এখানে মন্দির গড়েছিলেন।তবে আজ তা সম্পূর্ণ ভগ্নদশায়। পাথরের দেওয়ালের প্রাচীন মন্দির ঢাকা পড়ে গিয়েছে বহু পুরনো বটগাছের ডালপালায়। পাশেই গড়ে উঠেছে আধুনিক মন্দির। মন্দির চত্বরে রয়েছে প্রাচীন একটি কুয়ো। মন্দিরের পাশে আছে বেলেপাথরের তৈরি একটি ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ। পিছনে রয়েছে বিশাল এক জলাশয়।এগুলি সবই এলাকার ঐতিহাসিক নিদর্শন, এমনই দাবি কর্তৃপক্ষের। জলাশয়টি লোকমুখে ‘ইছাই সরোবর’ নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন : ডায়াবেটিসের মহাযম! হৃদরোগের মহৌষধ! ১৫ দিন রোজ পানিফল খেলে কমবে ওজন! চমকে যাবেন নিজের শরীর দেখেই
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিট্রিশদের বিরুদ্ধে সন্ন্যাস বিদ্রোহের অন্যতম চরিত্র ভবানী পাঠক। যাঁদের কার্যকলাপ মূলত ছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে। জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুরে একটি চা বাগানে রয়েছে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের মন্দির। ইতিহাসে বর্ণিত তথ্যের ভিত্তিতে, এই দুইজন মূলত ডাকাতি করতেন দুষ্টের দমন করতে।কিন্তু প্রশ্ন হল এই ভবানী পাঠক দুর্গাপুরে এলেন কোথা থেকে? ইতিহাসবিদদের মতে, দেবী চৌধুরানী নদীপথে বজরা নিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে ভেসে এসে দামোদরের পাড়ে গভীর জঙ্গলে আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই জায়গা থেকেই নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতেন ঐতিহাসিক দুই চরিত্র ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী।