জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের এই জায়গা যেন ভারতবর্ষের ক্ষুদ্র সংস্করণ। খাবার থেকে ধর্মীয় আচরণ, ভাষা থেকে নানান রীতি প্রকাশ করে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গার নাম ইতিহাসকে। ছোট ছোট টিলা সরিয়ে গড়ে ওঠা এই শহর যেন এক টুকরো ভারতবর্ষ। মূলত রেলপথকে কেন্দ্র করেই বহু মানুষের আগমন এবং বসবাস এখানে।
ভিন্ন ভাষাভাষী, ভিন্ন রুচি এবং ভিন্ন সংস্কৃতি ও ধর্মের মানুষ থাকেন রেল শহর খড়গপুরে! কোথাও দক্ষিণ ভারতীয়, কোথাও উত্তর ভারতের, কোথাও পূর্ব পশ্চিম ভারতের মানুষজন বসবাস করেন রেল শহরে। দীর্ঘদিন পূর্বপুরুষ ক্রমে তাঁরা থাকেন এখানে। চাকরির সুবাদে তাঁদের পূর্বপুরুষ এসে কাজে যোগ দিয়েছিলেন খড়গপুরে, এরপর সেখানেই তাঁদের পাকাপোক্ত বসবাস। কেউ কেউ আবার খড়গপুরকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছে ব্যবসা।
advertisement
স্বাভাবিকভাবে সারা বছর ধরে গোটা ভারতের বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন দেখা যায় খড়্গপুরে। কোথাও মাতা পুজো, কোথাও রামনবমী, কোথাও পোঙ্গল, আবার কোথাও ওড়িয়া রীতির নানা অনুষ্ঠান, স্বাভাবিকভাবে বাংলা তথা ভারতের মানচিত্রে এক অন্যতম জায়গা। সারা দেশের কাছে পরিচিত মিনি ইন্ডিয়া হিসেবে। জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক অন্যতম শহর খড়গপুর।
এই খড়গপুরের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস সারাদেশের একাধিক ধর্মের ও একাধিক ভাষাভাষী মানুষের। মিশ্র সংস্কৃতি ও ভাষাভাষী মানুষের বসবাসের কারণে ছোট্ট রেল শহর পরিচিত ভারতবর্ষের ক্ষুদ্র সংস্করণ হিসেবে। তবে জানেন কীভাবে খড়গপুর হয়ে উঠল মিনি ইন্ডিয়া? দেশের এত শহর থাকার সত্ত্বেও খড়গপুরকে কেন বলা হয় ভারতবর্ষের ক্ষুদ্র সংস্করণ? গবেষকেরা জানিয়েছেন, খড়গপুরকে কেন্দ্র করে আজ থেকে কয়েক দশক আগে শুরু হয় ট্রেন যাত্রা, যার পোশাকি নাম বি এন আর বা বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে।
আরও পড়ুন: চাকরির বাজারে সুখবর! মাধ্যমিক পাশেই সমবায় সমিতিতে কাজের সুযোগ, বিশদে জেনে আবেদন করুন
খড়গপুর শহরকে কেন্দ্র করে রেল যোগাযোগ এবং কর্মসংস্থান গড়ে ওঠার কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ কাজের সুবাদে এসে বসবাস করতে শুরু করলেন খড়গপুর শহরে। শুধু তাই নয়, বর্তমান দিনে খড়গপুরে একদিকে যেমন রয়েছে সুদীর্ঘ রেল স্টেশন, অন্যদিকে, প্রযুক্তিবিদ্যার অন্যতম প্রাচীন কেন্দ্র আইআইটি খড়গপুর, রয়েছে একাধিক বিদ্যালয়, হাসপাতাল এমনকী মেট্রোপলিটন শহরও।
খড়গপুরেই রয়েছে বায়ুসেনার বিমান ঘাঁটি। স্বাভাবিক ভাবে সারা দেশের কাছে এক অন্যতম নাম খড়গপুর। খড়গপুরকে কেন্দ্র করে একাধিক দুর গন্তব্যে ট্রেনের যাতায়াত। প্রতিবছর বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান পালন করেন তারা। দেখা যায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক উৎসব অনুষ্ঠান আচার নিয়ম পালিত হয় রেল শহরে। তাই রেল শহর খড়গপুরকে আখ্যায়িত করা হয়েছে মিনি ইন্ডিয়া হিসেবে। মিশ্র ভাষাভাষী, সংস্কৃতি এবং ভিন্ন ধরনের মানুষের বসবাসের এই জায়গা বহন করে চলেছে সুদীর্ঘ ইতিহাসের নানা নিদর্শন।





